আজকের যুগেও সমান প্রাসঙ্গিক সওয়া শতক আগের ভাষণ। ছাত্র সমাবেশে এ কথাই বোঝানোর চেষ্টা করলেন মোদী। ছবি: পিটিআই।
১২৫ বছর আগে শিকাগোতে স্বামী বিবেকানন্দ গীতা উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা সভ্যতাকে ধ্বংস করছে। সকাল সকাল সেই সাবধানবাণীকে সামনে রেখেই সনিয়া গাঁধী বলেছিলেন, এই অসহিষ্ণুতার পরিবেশেও সে কথা সমান প্রাসঙ্গিক। কংগ্রেস সভানেত্রীর এই খোঁচার মুখে নরেন্দ্র মোদী নিজের উদার ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করলেন আজ।
বিজ্ঞানভবনে মোদীকে বর্ণনা করা হল বিবেকানন্দের ‘যোগ্য’ উত্তরসূরি, ‘আজকের নরেন্দ্র’ হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীও বিবেকানন্দের সঙ্গে দীনদয়াল উপাধ্যায়, মোহনদাস কর্মচন্দ্র গাঁধী আর নিজের কর্মকাণ্ডকে জুড়ে দিলেন এক সারিতে।
আরও পড়ুন: স্বামীজির সেই ৯/১১ সম্প্রীতির তারিখ ছিল: প্রধানমন্ত্রী
যদিও দীনদয়াল ও বিবেকানন্দকে এক করা নিয়ে বিতর্ক আগেই দানা বেঁধেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ফরমান নিয়েও বিরোধিতা এসেছে। কিন্তু এ দিন প্রায় এক ঘণ্টার বক্তৃতাতে মোদী বোঝাতে চাইলেন, বিবেকানন্দের পথেই হাঁটছেন তিনি। নারীর সম্মান, আধুনিকতার আলিঙ্গন, সব মতের সমন্বয়, ‘কী খাবেন কী পরবেন’-এর গন্ডির বাইরে বেরোনো— এ সব কথাই তাঁর মুখে শোনা গেল। গাঁধী এবং দীনদয়ালও যে এমনই বলতেন, সেই দাবিও।
এমনকী যুবসমাজের মন পেতে মোদীর মুখ থেকে ‘গোলাপ দিবস’কে সমর্থনের কথাও বেরলো। শুধু জুড়লেন যদি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়শি রাজ্য দিবসও পালন হয়, তাতে সংস্কৃতির আদানপ্রদান বাড়তে পারে। আবার একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিলেন, ‘খারাপ’ লাগলেও দেশ স্বচ্ছ রাখতে হবে। নইলে ‘বন্দেমাতরম’ বলার অধিকার নেই। বিবেকানন্দের সঙ্গে জামশেদজি টাটার বার্তালাপ উদ্ধৃত করে বোঝালেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র ভাবনা সেখান থেকেই নেওয়া। স্ট্যান্ড-আপ ইন্ডিয়া, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, মুদ্রা যোজনার অনুপ্রেরণাও। মনে করালেন, আজ দুনিয়া যখন বলে একবিংশ শতাব্দীটা এশিয়ার দখলে, সেটাও বিবেকানন্দেরই বলে যাওয়া।
বিরোধীদের যদিও কটাক্ষ, বিবেকানন্দকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী যতগুলি প্রকল্পের কথা শুনিয়েছেন, সব ক’টি ব্যর্থ। আর্থিক বৃদ্ধি তলানিতে ঠেকেছে, রোজগার হু-হু করে কমছে। কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির টীপ্পনী, ‘‘বিবেকানন্দ যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, মোদীর ভারত তার উল্টো পথে হাঁটছে।’’