—ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় আসার আগেই পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদীরা। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিষয়টি এখনও যৌথ সংসদীয় কমিটির বিবেচনাধীন। তবে এর মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে ৭টি রাজ্যের ১৬টি জেলায় পড়শি দেশ থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কাজ শুরু করে দিল সরকার। পাঁচ রাজ্যে ভোট ঘোষণার পরেও সরকারের এই সিদ্ধান্ত নির্বাচনী আচরণ বিধির লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র জয়বীর শেরগিলের বক্তব্য, হিন্দু ও শিখ ভোট পেতেই এই সিদ্ধান্ত। এতে নিঃসন্দেহে পাঁচ রাজ্যের ভোটারদের প্রভাবিত করবে।
লক্ষ্যণীয় ভাবে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে যে ১৬টি জেলার জেলাশাসকদের নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, অসম বা ত্রিপুরার মতো বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যের কোনও জেলা নেই। পূর্ব ও দক্ষিণ দিল্লি, ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর, গুজরাতের আমদাবাদ, গাঁধীনগর ও কচ্ছ, মধ্যপ্রদেশের ভোপাল ও ইন্দৌর, মহারাষ্ট্রের নাগপুর, মুম্বই, পুণে ও ঠানে, রাজস্থানের জোধপুর, জয়পুর ও জৈসলমের, উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের জেলাশাসক পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে পারবেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯৫৫-র নাগরিক আইন অনুসারেই জেলাশাসকেরা এই কাজ করতে পারবেন। কিন্তু, ইতিমধ্যেই সরকার এই আইন সংশোধনের প্রস্তাব এনেছে। প্রাথমিক আইনে বলা ছিল, শরণার্থীরা ১২ বছর বা তার বেশি ভারতে বসবাস করলে তবেই ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। সংশোধনীতে এই ১২ বছরের মেয়াদ কমিয়ে ৬ বছর করার প্রস্তাব রয়েছে। অসম ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি এই সংশোধনীর বিরোধিতা করায় যৌথ সংসদীয় কমিটি সেটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করেছে।
অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত খসড়ায় ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ায় চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, যে সব নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের অধিকাংশই মুসলিম। সেখানে অসমীয়া ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্য বাধার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু অমুসলিম শরণার্থী রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরাতেও। কেন এই তিন রাজ্যের কোনও জেলার নাম বিজ্ঞপ্তিতে নেই, উঠেছে সেই প্রশ্নও।