জঙ্গিদের কড়া বার্তা দিয়েই বন্দে ভারতের সূচনা মোদীর

সৌজন্যে ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে ‘ট্রেন১৮’ নামে উন্নত প্রযুক্তির ট্রেন তৈরি হয়েছিল। তার নতুন নাম হয়েছে ‘বন্দে ভারত’।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

বারাণসী শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৫
Share:

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। ছবি: পিটিআই।

গত পাঁচ বছরে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের পালে সে-ভাবে হাওয়া লাগতে দেখা যায়নি। কিন্তু ভোটের আগে সেই হাওয়া জিইয়ে রাখার চেষ্টা করল মোদী সরকার। সৌজন্যে ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে ‘ট্রেন১৮’ নামে উন্নত প্রযুক্তির ট্রেন তৈরি হয়েছিল। তার নতুন নাম হয়েছে ‘বন্দে ভারত’।

Advertisement

আজ নয়াদিল্লি থেকে বারাণসী রুটে ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লি তাঁর তখ্‌ত এবং বারাণসী তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র। বেলা ১১টা নাগাদ মন্ত্রিসভার বৈঠক সেরে দিল্লি স্টেশনে পৌঁছন তিনি। মোদীর বক্তৃতায় ছিল জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা এবং গত পাঁচ বছরে রেলের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের খতিয়ান। বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে বারাণসীর উদ্দেশে রওনা দেয় নীল-সাদা রঙের ট্রেনটি। যাত্রী নানা প্রান্তের সাংবাদিক ও রেলকর্তারা।

উন্নত মানের ১৬ কামরার সম্পূর্ণ বাতানুকূল ট্রেন বন্দে ভারত। ১৪টি সাধারণ চেয়ারকার, দু’টি এগ্‌জিকিউটিভ চেয়ারকার। দু’প্রান্তে থাকবেন চালক ও গার্ড। রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল জানান, এটি দেশের প্রথম ‘সেল্ফ প্রপেলড ট্রেন’। অর্থাৎ এই ট্রেনে আলাদা করে ইঞ্জিন জুড়তে হবে না। এর সঙ্গে কোনও কামরা জোড়া বা কাটা যাবে না। রেলকর্তাদের দাবি, এই ট্রেন দূরপাল্লার অন্য ট্রেনের থেকে দ্রুত গতি বাড়াতে পারবে। যাত্রাপথে ১৫% পর্যন্ত সময় বাঁচানো যাবে। এতে রয়েছে উন্নত মানের ব্রেক। ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির প্রাক্তন জিএম সুধাংশু মণি বলেন, ‘‘২০১৭ সালে এপ্রিলে রেল বোর্ড এই ট্রেন তৈরি করতে বলে। অনেক রেলকর্তা সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু কর্মীরা ১৮ মাসে এই ট্রেন তৈরি করেছেন।’’

Advertisement

বন্দে ভারতের প্রতিটি কামরায় রয়েছে স্বয়ংক্রিয় এবং সেন্সর নিয়ন্ত্রিত বাতানুকূল ব্যবস্থা। শৌচাগারের কল, ভেস্টিবিউলের দরজাও নিয়ন্ত্রণ করছে সেন্সর। সবই বায়ো-টয়লেট। কোন স্টেশন আসছে, তা জানানো হচ্ছে জিপিএস প্রযুক্তির মাধ্যমে। ট্রেনের গতিবেগও স্ক্রিনে ভেসে উঠছে। কামরায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চালকের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন যাত্রীরা। রয়েছে ওয়াইফাই ব্যবস্থাও (যদিও আজ তা সে-ভাবে কাজ করেনি বলে অনেকের অভিজ্ঞতা)। এগ্‌জিকিউটিভ শ্রেণির চেয়ার ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরানো যাবে, আসনের তলায় মোবাইল চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

বন্দে ভারতে দিল্লি-বারাণসী সাধারণ শ্রেণির ভাড়া ১৭৯৫ টাকা, এগ্‌জিকিউটিভ শ্রেণিতে ৩৪০০। আজ নয়াদিল্লি, কানপুর এবং ইলাহাবাদ স্টেশনে এই ট্রেন নিয়ে উৎসাহ দেখা গিয়েছে। মার্চে এমন ধরনের আরও একটি ট্রেন আসছে। রেলমন্ত্রী বলেন, এই রুটে বন্দে ভারত সফল হলে ভবিষ্যতে অন্যান্য রুটেও এমন ট্রেন চলবে। হাওড়া-ভুবনেশ্বর এবং হাওড়া-পটনা রুটে এই ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা আছে। এই ট্রেন বাইরে রফতানির কথাও ভাবছে রেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন