জুনেই ট্রাম্পের দেখা পেতে চান মোদী

বছর শেষে নয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে জুন মাসের শেষেই আমেরিকা যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।হোয়াইট হাউসে আসার ছ’দিনের মাথায় মোদীকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ভারতই আমেরিকার প্রকৃত বন্ধু।’’

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৭ ০৪:১৩
Share:

বছর শেষে নয়, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে জুন মাসের শেষেই আমেরিকা যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

হোয়াইট হাউসে আসার ছ’দিনের মাথায় মোদীকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘‘ভারতই আমেরিকার প্রকৃত বন্ধু।’’ হোয়াইট হাউস পরে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, এ বছরের শেষে মোদীকে আমেরিকায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু তার আগেই মার্কিন দেশে পা রাখতে মরিয়া মোদী। সব ঠিকঠাক এগোলে ২৫ জুন থেকেই শুরু হতে পারে তাঁর সফর।

কেন এই তড়িঘড়ি? বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এর সঙ্গে জড়িয়ে ভারতের কূটনৈতিক স্বার্থ। যেমন, মোদীর কাছে খবর এসেছে, তালিবানদের মদত দিতে রাশিয়া আফগানিস্তানে বিশেষ ধরনের হামলার পরিকল্পনা নিয়েছে। দিল্লিতে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল এইচ আর ম্যাকমাস্টারের সঙ্গে মোদী ও অজিত ডোভালের এ নিয়ে সবিস্তার আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার ‘মিত্র’ সিরিয়ার উপর মার্কিন হানা দেখে পুতিন এখন তাঁর নির্বাচনের আগে এই পরিকল্পনায় তৎপর। বিদেশ মন্ত্রক মনে করছে আফগানিস্তানে আমেরিকাকে সক্রিয় ভূমিকায় নামাতে দ্রুত এই বৈঠক হওয়া দরকার। কারণ, কাবুলে ভারতের স্বার্থ জড়িয়ে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সনিয়া ফের সক্রিয়, সুস্থ থাকলে নামবেন প্রচারে

মোদী মার্কিন প্রশাসনকে জানিয়েছেন, জুনেই আমেরিকা যেতে চান তিনি। ম্যাকমাস্টার এ বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পরেই দিন ক্ষণ চূড়ান্ত হবে। জুলাইয়ে জার্মানিতে জি-২০ দেশগুলির বৈঠক। তখনও ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর দেখা হবে। কিন্তু তার আগেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সচেষ্ট মোদী। কারণ, চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। অতীতে চিন সম্পর্কে কড়া মনোভাব নিলেও ট্রাম্প এখন বেজিং সম্পর্কে নরম। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি ও তাদের সঙ্গে চিনের সম্পর্কের জেরে ট্রাম্প দৌত্যের পথেই এগোচ্ছেন। ক্ষমতায় আসার পথে ট্রাম্প পাকিস্তান-চিন সম্পর্কে কঠোর ভাষা প্রয়োগ করেছিলেন। তাতে উৎসাহিত হয়েছিল দিল্লি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, আমেরিকা নিজেদের স্বার্থ দেখেই এগোচ্ছে। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতের স্বার্থ নিয়ে ফয়সালা চাইছেন মোদী।

এইচ-১বি ভিসা নিয়ে ভারত যে ভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, আমেরিকা তাতে অসন্তুষ্ট। তবে ভিসা বিতর্কে কৌশল বদলে ফেলেছেন মোদী। সম্প্রতি আমেরিকা গিয়ে অরুণ জেটলিও ভিসা নীতির বিরোধিতা করেননি। তবে ভারতীয়দের সমস্যা নিয়ে আমেরিকার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আর মোদী নিজে ভিসা নীতি নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের মতো আক্রমণের পথেও হাঁটছেন না।

মোদী আগেই ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। এর পর উত্তরপ্রদেশের জয়ে অভিনন্দন জানিয়ে এল ট্রাম্পের ফোন। তার পরেই দ্বিগুণ উৎসাহে সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মোদী। তবে এরই মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারত-পাক উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী ট্রাম্প। নয়াদিল্লি যদিও বুঝিয়ে দিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে তৃতীয় কাউকে মেনে নেওয়া হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন