দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন দেওয়ার দাবি করে এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ।
ক’দিন আগে আম আদমি পার্টি অভিযোগ করে, টেলিফোনে মহারাষ্ট্রের রাজস্ব মন্ত্রী একনাথ খডসের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের যোগাযোগ হয়েছে। সেই অভিযোগের রেশ কাটতে না কাটতেই নিজের পদের অপব্যবহার করে জমি-কেলেঙ্কারিতে নাম এল খডসের বিরুদ্ধে। সরকারের দু’বছর পূর্তিতে নরেন্দ্র মোদী থেকে সরকার ও দলের ছোট-বড় নেতারা বারবার বলে এসেছে, এ সরকারে দুর্নীতির লেশমাত্র নেই। এই অবস্থায় মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসতেই নড়েচড়ে বসেছেন মোদী-শাহ।
আজ দিল্লিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবীসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন মোদী ও শাহ। বিজেপি সূত্রের খবর, খডসেকে পদ থেকে সরিয়ে ‘দুর্নীতিমুক্ত’ ভাবমূর্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিরোধীরা তো বটেই, খোদ এনডিএর শরিক শিবসেনাও তাঁকে সরানোর দাবি তুলছে। কিন্তু খডসের মতো প্রবীণ ও অভিজ্ঞ নেতাকে সরানোও যে সহজ কাজ নয়, সেটিও জানেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মনোভাবের আঁচ পেয়ে খডসে ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কট করা শুরু করেছেন। নিজের লালবাতি গাড়িও ব্যবহার করছেন না। আর নিজের সমর্থকদের দিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই ধরনা দেওয়ানো শুরু করেছেন।
সামনেই মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের নির্বাচন। তার আগে খডসেকে সরালে তার পরিণাম কী হবে, সেটিও এখন মূল্যায়ণ করে দেখছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আপাতত কিছুটা সময় ব্যয় করার জন্য দেবেন্দ্রর কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, এর আগেও বিরোধীরা মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কেলেঙ্কারি, ললিত-গেটের মতো ইস্যুতে সংসদ উত্তাল করেছে। মহারাষ্ট্রেও পঙ্কজা মুণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু সেগুলি কোনওটাই মোদী সরকার আসার পর শুরু হয়নি। রাজনৈতিকভাবে তা সামালও দেওয়া গিয়েছে। এখনও কংগ্রেস লাগাতার গুজরাতের গ্যাস উত্তোলন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আসছে। আজও জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী প্রধান (পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান) নবরত্ন সংস্থা ওএনজিসিকে চাপ দিচ্ছে গুজরাত পেট্রোলিয়াম সংস্থা কিনে নেওয়ার জন্য।’’
কিন্তু মোদী সরকার আসার পর মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারের অধীনে এই প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ উঠল, যেটি নিয়ে বিরোধীরা সরাসরি কেন্দ্রের মোদী সরকারকে আক্রমণ করছে। তাদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, না খাবেন, না খেতে দেবেন। এখন কেন একনাথ খডসেকে সরানো হচ্ছে না? মোদীর ভাবমূর্তি অক্ষত রাখতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন অমিত শাহরা।