সুর বদলে দলেই উঠছে প্রশ্ন।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের পরে কিছুটা নজিরবিহীন ভাবেই জয়ের প্রধান কান্ডারি নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসায় সরব হলেন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। তাঁর কথায়, ‘‘এই জয়ে প্রমাণিত হয়েছে এ দেশের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নরেন্দ্র মোদী।’’
গত কাল জয়ের পরে প্রধানমন্ত্রীকে টুইট করে জয়ের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু সে’টি ছিল নিছকই সৌজন্যমূলক টুইট। কিন্তু যে কংগ্রেসের নোট বাতিল নিয়ে সরকারকে আক্রমণ করার প্রধান মুখ ছিলেন তিনি, যাকে সামনে রেখে দিল্লি পুরসভা নির্বাচন জেতার রণকৌশল বানাচ্ছে দল— সেই চিদম্বরমের মুখে হঠাৎ মোদীর ভূয়সী প্রশংসা দেখে খটকা জেগেছে খোদ বিজেপি শিবিরও। চিদম্বরমের মুখে প্রতিপক্ষের এই খুল্লমখুল্লা প্রশংসা পছন্দ হয়নি কংগ্রেসের। দল জানিয়েছে, ‘‘চিদম্বমের মন্তব্যের সঙ্গে দল একমত নয়। কারণ পাঁচ রাজ্যের মধ্যে কংগ্রেস তিন রাজ্যে সরকার গড়ার মতো জায়গায় রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: প্রশ্নে রাহুলের নেতৃত্ব
মূলত এর কারণ হিসাবে উঠে এসেছে দু’টি তত্ত্ব। প্রথমত-সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী চিদম্বরমের ছেলে কার্তি চিদম্বরম ও তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ এনেছেন। স্বামীর অভিযোগ, কার্তির বিদেশের ২১টি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যেগুলির বিষয়ে তিনি আয়কর দফতরে জানাননি। কার্তির পাশাপাশি তাঁর বাবা পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে এয়ারসেল-মার্ক্সিস লেনদেনে দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। ভারতীয় রাজনীতিতে স্বামী এমন এক জন ব্যক্তিত্ব, তিনি যখন যার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁর রাজনৈতিক জীবন প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ জেলে বন্দি এডিএমকে নেত্রী শশিকলা। তাই স্বামীর বিষনজর থেকে বাঁচতে চিদম্বরম আগে ভাগেই মোদী ভজনায় নেমে পড়েছেন বলেই সরব হয়েছে কংগ্রেসের একাংশ। দ্বিতীয়ত-আগ বাড়িয়ে মোদীর প্রশংসা করে আসলে রাহুল গাঁধীর দুর্বলতাকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন চিদম্বরম। কারণ দলের মধ্যে এখনও রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে নেই ঠিকই, কিন্তু কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তবে বিজেপির অনেক মনে করেছেন, নিছকই সৌজন্যবশত ওই কথা বলেছেন চিদম্বরম। অরুণ জেটলি বিরোধী নেতা থাকাকালীন একাধিক বার জয়ী প্রতিপক্ষকে জেতার জন্য অভিনন্দন জানাতে দেখা যেত। গণতন্ত্রের সেই শিষ্টাচার মেনেই এবার সেই পথে হাঁটলেন চিদম্বরম।