নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আগামী মাসে কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলির নেতাদের বৈঠকে (চোগাম) সংখ্যালঘু নিপীড়নের প্রশ্নটি নিয়ে মুখ পোড়ার সম্ভাবনা তৈরি হল নরেন্দ্র মোদী সরকারের। ক্ষত মেরামতে এখন থেকেই যথাবিহিত কূটনৈতিক সতর্কতা নিতে শুরু করেছে সাউথ ব্লক। গত সপ্তাহে হাউস অব কমন্স-এর ওয়েস্টমিনস্টার হলে ধর্ম এবং বিশ্বাসের স্বাধীনতা বিষয়ক একটি দীর্ঘ বিতর্ক হয়। সেখানে বেশ কিছু ব্রিটিশ এমপি ভারতের প্রসঙ্গ তুলে জানিয়েছেন, খ্রিস্টান এবং শিখদের উপরে নিপীড়নের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে ভারতে। সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের প্রশ্নে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে এক সারিতে বসিয়েছেন ব্রিটিশ এমপি-রা।
গোটা বিষয়টি নিয়ে চরম অস্বস্তিতে কেন্দ্র। আগামী মাসে চোগাম-এ যোগ দিতে লন্ডনে গেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন ভারতীয় কূটনীতিকেরা। ঘটনা তুলে তুলে প্রশ্ন করা হতে পারে বলেও মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। সরকারি ভাবে বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য বলছে ওই বিতর্কের লিখিতরূপ না দেখে কোনও মন্তব্য করা হবে না। কিন্তু তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে ভিতরে ভিতরে। সূত্রের খবর, লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এক্ষেত্রে সরকারের ভাবমূর্তিকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য সক্রিয়তা বাড়াতে। যে সব ব্রিটিশ এমপি এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কূটনীতিকদের। আন্তর্জাতিক স্তরে এ নিয়ে বিড়ম্বনা তৈরি হলে তার ফল ঘরোয়া রাজনীতিতেও পড়বে বলে মনে করছে সরকার। ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে এ নিয়ে জলঘোলা আদৌ চায় না বিজেপি।
তবে অস্বস্তির যথেষ্ট কারণ তৈরি হয়েছে। লেবার পার্টির দুই এমপি ডচের্টি হিউজেস এবং ফাবিয়ান হ্যামিল্টন ওই বিতর্কে জানিয়েছেন, এক সময়ে ভারতে খ্রিস্টধর্মের শিকড় গভীর ছিল। আজ খ্রিস্ট ধর্মাচরণ করাটাই সে দেশে অত্যন্ত বিপজ্জনক কাজ। ওই বিতর্কের জবাবি বক্তৃতায় এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘‘ডচের্টি হিউজেস-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে এই বিষয়ে আমরা কাজ করছি। ভারতে শিখ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অবস্থা নিয়ে বেশ কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা নিয়েও কিছু দিক উঠে এসেছে। এপ্রিলে চোগাম সম্মেলন বিষয়টি তোলার জন্য সব চেষ্টা করব। আমাদের পার্লামেন্টের স্বর ভারতের কানে পৌঁছতে চেষ্টা করা হবে।’’