চৌকিদারের দায়িত্ব বদল—অন্তত তেমনই বলছেন বিরোধীরা।
লোকসভা ভোটের সময় নিজেকে ‘জনগণের চৌকিদার’ বলে প্রচার করতেন তিনি। পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার ৯ দিন পর মুখ খুলে সেই ‘চৌকিদার’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অন্যদেরই চৌকিদার বানিয়ে দিলেন! গোটা কেলেঙ্কারির জন্য নজরদারি সংস্থাগুলিকেই দায়ী করে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নজরদারির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করুন।’’
নীরব মোদী-মেহুল চোক্সীদের সরাসরি নাম না করলেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার জনগণের অর্থের নয়ছয় বরদাস্ত করবে না। আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, এই সরকার আর্থিক বিষয়সংক্রান্ত অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে, নিচ্ছে এবং নেবে।’’
ক’দিন আগেই পিএনবি-কেলেঙ্কারি নিয়ে মুখ খুলে মোদীর অন্যতম সেনাপতি তথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দুষেছিলেন অডিটর-চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট-সহ নজরদারি সংস্থাগুলিকে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে পাঠানো চিঠিতেও দায় চাপানো হয়েছিল নজরদারি সংস্থাগুলির ঘাড়ে। তখনই বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন যে দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক প্রতারণার দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে সরকার। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে একই অভিযোগ তাঁদের। সেই সঙ্গে ‘চৌকিদার’ শব্দটি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তাঁরা।
কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘উনি লোকসভা ভোটের আগে নিজেকে বলতেন চৌকিদার। ওঁর জমানাতেই বিজয় মাল্য-ললিত মোদী-নীরব মোদীরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। চৌকিদারই ওঁদের পালাতে সাহায্য করেছেন। চার বছরের মাথায় সেই চৌকিদার পদ থেকে অবসর নিলেন মোদী!’’
মোদী জমানায় একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে সরব বিরোধীদের অভিযোগ, এই সরকার তাদের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিদের নানা ভাবে সুযোগসুবিধা পাইয়ে দেয়। এ দিনের অনুষ্ঠানে সেই অভিযোগের জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ‘‘ইমানদারিকে তিন বছরে প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দিয়েছি।’’ পাল্টা বিদ্রুপ করে কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর ইমানদারির ঠেলায় দেশের দুর্নীতি-সূচক লাফিয়ে বেড়েছে! বিদেশে মাথা হেঁট হয়েছে বারবার।’’