নরেন্দ্র মোদী।
উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেলের বিদ্রোহ সামাল দিয়েও রক্ষে নেই। নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে এই প্রথম একের পর এক বিজেপি মন্ত্রী-বিধায়ক প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। আর এর মধ্যেই গুজরাতে আগামিকাল থেকে শুরু হওয়া পাতিদারদের বাণিজ্য সম্মেলন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানও এড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
ঘরোয়া মহলে বিজেপির কিছু নেতা মানছেন, রাহুল গাঁধী যে ভাবে গুজরাতে মোদীর শক্তি খাটো করে দিয়েছেন, তাতেই বিক্ষোভের সুর আরও তীব্র হচ্ছে। তা না হলে যে মোদী গুজরাতে এক ‘অতিকায়’ ব্যক্তি, অমিত শাহ প্রবল ক্ষমতাশালী, সেখানে নিতিন পটেলের মতো নেতার বিদ্রোহের কাছে মাথা ঝোঁকাতে হতো না নেতৃত্বকে। মোদী-শাহ মাথা নোয়ানোর পরেই মন্ত্রী পুরুষোত্তম সোলাঙ্কি ওজনদার দফতর চেয়ে বিদ্রোহী হয়েছেন, ইস্তফার হুমকিও দিয়েছেন। আরও দুই বিধায়ক জেঠা ভরওয়াড়, ঝাঙ্খানা পটেলের সমর্থকরাও দলের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বাবু বোখিরিয়া, রাজেন্দ্র ত্রিবেদীর মতো বিধায়করাও ক্ষুব্ধ।
নিজের উপমুখ্যমন্ত্রীকে সামলানোর পরে মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী আপাতত সোলাঙ্কির সঙ্গে কথা বলে তাঁকে ওজনদার দফতর দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ৭ টি দফতর এখনও খালি। ১৪ জানুয়ারি সংক্রান্তির পরে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ কর়ে সব ক্ষোভ মেটানো হবে।
নিজের রাজ্যেই যখন বেসামাল পরিস্থিতি, সেই সময় খোদ মোদী কাল থেকে গাঁধীনগরে শুরু হওয়া পাতিদার বাণিজ্য সম্মেলনেই যাচ্ছেন না। গুজরাতের ফল প্রকাশের এক দিন আগে এই সম্মেলনের আয়োজক গাগজি সুতারিয়া জানিয়েছিলেন, মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে কোনও সবুজ সঙ্কেত আসেনি।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, ‘‘কাল সংসদের শেষ দিন। সন্ধেয় অম্বেডকর ভবনে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান রয়েছে।’’ কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্ন, নিজের রাজ্যে বাড়তে থাকা ক্ষোভ এড়াতেই কী গুজরাত-মুখো হচ্ছেন না প্রধানমন্ত্রী? ভোটে এই পাতিদার কাঁটারই মুখোমুখি হতে হয়েছিল মোদীকে। রাহুল-সঙ্গী হার্দিক পটেল পাতিদারদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে এনে বেগ দিয়েছিলেন বিজেপিকে।
বিশ্বের প্রায় ত্রিশটি দেশে বসবাসকারী পাতিদার শিল্পপতিরা মিলে এই বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। এঁদের মূল লক্ষ্য, ছোট ও মাঝারি শিল্পে জোর দেওয়া। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী, উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেলের এই সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা। আয়োজকরা চাইছিলেন, প্রধানমন্ত্রী অন্তত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বার্তা দিন। কিন্তু তারও কোনও নিশ্চয়তা প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আসেনি।