মণি-হারা হতে নারাজ মোদী

উন্নয়নকে হাতিয়ার করে রাহুলের টানা প্রচারে গুজরাতে বিপাকে বিজেপি। এই অবস্থায় মণিশঙ্করের ‘নীচ’ মন্তব্যে অক্সিজেন পেয়ে গিয়েছে তারা।

Advertisement

অগ্নি রায়

ছোটা উদয়পুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

রাত পোহালেই প্রথম দফার ভোট। শেষ বেলায় মণিশঙ্কর আইয়ারের ক্ষত মেটাতে নরেন্দ্র মোদীকে উন্নয়নে টানতে চাইলেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু মোদী যে মণি-কে মধ্যমণি করেই জয়ের সিঁড়ি দেখছেন! তাই মণি-কে আঁকড়েই খেলছেন মেরুকরণ, ‘গুজরাত অস্মিতা’র তাস। তাতেই বিঁধছেন সনিয়া এবং রাহুল গাঁধীকেও।

Advertisement

উন্নয়নকে হাতিয়ার করে রাহুলের টানা প্রচারে গুজরাতে বিপাকে বিজেপি। এই অবস্থায় মণিশঙ্করের ‘নীচ’ মন্তব্যে অক্সিজেন পেয়ে গিয়েছে তারা। মোদী নিজেও। তাই মণির বলা ‘নীচ’ মন্তব্যকে অস্ত্র করে কংগ্রেস নেতাদের নাম তুলে দিনভর সভায় সভায় নালিশ ঠুকে গেলেন মোদী! কে তাঁকে ‘বাঁদর’, ‘ভস্মাসুর’, ‘পাগল কুকুর’, ‘রাবণ’, ‘রাক্ষস’, ‘ভাইরাস’, বলেছেন, সেই কথা টানলেন।

সনিয়া কবে তাঁকে ‘মওত কা সওদাগর’ এবং ‘জহর কি খেতি’ বলেছিলেন, রাহুল কবে তাঁকে উদ্দেশ করে ‘রক্তের দালালি’ করার কথা বলেছিলেন— তুললেন সে সবও। সেই সঙ্গে ‘গুজরাত অস্মিতা’র তাস খেলে বললেন, ‘‘কী অপরাধ আমার? আমি গুজরাতি, নিচু জাত, গরিব ঘরের বলে? তাই এত ঘৃণা?’’

Advertisement

মণির প্রসঙ্গ টেনে মেরুকরণের তাসও খেলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘এই মণিশঙ্করই পাকিস্তানে গিয়ে আমার ‘সুপারি’ দিয়েছিলেন! বলেছিলেন, মোদীকে হটালেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক শোধরাবে।’’ পাকিস্তানকে অস্ত্র করে জাতীয়তাবাদ উস্কে দেওয়া মোদীর পুরনো তাস।

মোদী নিজে এ ভাবে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন দেখে বিজেপির একাংশ বিস্মিত। তাঁদের প্রশ্ন, তা হলে কি গুজরাতে জিততে ৫৬ ইঞ্চির ছাতি নয়, চোখের জলই ভরসা মোদীর? অন্য একটি অংশ আবার চোখের জলেই ভাল ফলের আশা করছেন।

রাহুল অবশ্য এ পথে হাঁটতে নারাজ। তিনি বলছেন, ‘‘কোনও কিছুই কংগ্রসকে আটকাতে পারবে না। গুজরাতে কংগ্রেসই জিতবে। ঝড় আসছে।’’ বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, কংগ্রেস জিতবে। চোরাস্রোত বইছে।’’ সেই সঙ্গেই জানান, কুকথা নয়, তিনি গুজরাতের উন্নয়নকেই পাখির চোখ করতে চান। আজ ছোটা উদয়পুরের সভায় রাহুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যা-ই বলুন, ওঁর প্রতি অভদ্র ভাষা আমাদের সংস্কৃতি নয়। ওঁরা বলুক, আমরা বলব না। তাই মণিশঙ্কর আইয়ারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু উন্নয়নের কথাই বলব।’’ কংগ্রেস নেতাদের রাহুলের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা যাবে না। তবে এত করেও শেষ বেলায় মণিশঙ্কর যে বড় ক্ষত তৈরি করেছেন, তা মানছেন কংগ্রেস নেতারা। তাই মণি-বিতর্ক দূরে সরাতে চাইছেন তারা। কিন্তু বিজেপি ছাড়লে তো!

নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী নিজেও যে মণি-হারা হতে নারাজ!

গুজরাত নির্বাচন নিয়ে সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন