Narendra Modi

Narendra Modi: কর্মী-বৈঠকেও মোদীর মন্ত্র সেই মেরুকরণ

পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে হিন্দু-মুসলিম সমাজের মধ্যে আড়াআড়ি বিভাজনের লক্ষ্যে মেরুকরণ তাস খেললেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৪
Share:

উত্তরপ্রদেশের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

ওমিক্রন সংক্রমণের আবহে ভোট ঘোষণার পরে এখনও উত্তরপ্রদেশের মাটিতে পা দিতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আজ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের দলীয় কর্মীদের সঙ্গে প্রথম ভার্চুয়াল বৈঠকেই হিন্দু-মুসলিম সমাজের মধ্যে আড়াআড়ি বিভাজনের লক্ষ্যে মেরুকরণ তাস খেললেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৩ সালের মুজফফরনগরের দাঙ্গার স্মৃতি উস্কে বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপির পরিবর্তে যদি সমাজবাদী পার্টি ক্ষমতায় আসে, সে ক্ষেত্রে ফের দাঙ্গা, গুন্ডারাজ ও বাহুবলী শাসনের পুনরাবৃত্তি হওয়ার পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

গত দু’টি লোকসভা ও পাঁচ বছর আগে হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জয় বিজেপির জয় নিশ্চিত করে দিয়েছিল। বিশেষ করে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ সমাজ বিজেপি প্রার্থীদের পিছনে এককাট্টা হয়ে দাঁড়ানোয় হালে পানি পায়নি বিরোধীরা। কিন্তু জোর করে আনা কৃষি আইনের কারণে সেই কৃষক তথা জাঠ সমাজের একটি বড় অংশ বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়েছে। হাত শক্ত করেছে রাষ্ট্রীয় লোক দলের, যাদের সঙ্গে জোট করেছে সমাজবাদী পার্টি। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে যদি জাঠ ও মুসলিম ভোট বিজেপির বিরুদ্ধে যায় সে ক্ষেত্রে দলের পক্ষে জেতা আসন ধরে রাখা যে অসম্ভব, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথের পরে আজ প্রচারে নেমেই মেরুকরণের রাজনীতিতেই ভরসা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।

আজ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দেওয়া প্রায় পঞ্চাশ হাজার বিজেপি কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে অতীতের এসপি শাসনের ছবি তুলে ধরে মোদী বলেন, “যখন পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গা চলছিল তখন এসপি নেতারা উৎসবে মেতেছিলেন।” অখিলেশের গত শাসনে অভিযোগ ওঠে মুসলিমদের অত্যাচারের কারণে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৈরানা এলাকা থেকে হিন্দুদের এক কাপড়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসতে হয়েছিস। আজ কৈরানার নাম না করে মোদী বলেন, “সমাজের গরিব ও পিছিয়ে পড়াদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নেওয়া ছিল সাধারণ ঘটনা। কিন্তু যোগী সরকার এসে উত্তরপ্রদেশকে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্ত করেন।” অনেকের মতে মোদী আজ বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতা থেকে সরে গেলে ফের পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে অসুরক্ষিত হয়ে পড়বেন হিন্দুরা। ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে বাহুবলীরা। মোদীর কথায়, “ক্ষমতায় ফিরতে ফের জোট বাঁধছে দুষ্কৃতীরা। এরা এত দিন ক্ষমতায় থাকায় নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে মনে করছিল, তাই ক্ষমতা হারানো মেনে নিতে পারছে না। এখন জোট বাঁধছে ক্ষমতায় ফেরার লক্ষ্যে।” কেবল মোদীই নন, জাঠ-মুসলিমে বিভাজন ঘটাতে সক্রিয় হয়েছেন অমিত শাহও। তাঁর কথায়, “এসপি ও আরএলডির এই জোট ভোট গণনা পর্যন্ত টিকবে। এসপি যদি জেতে জাঠেদের উপরে ছড়ি ঘোরাবেন বাহুবলী সংখ্যালঘু নেতা আজম খান। জাঠেরা এক পাশে পড়ে থাকবে।”

Advertisement

সম্প্রতি মথুরায় প্রচার করতে গিয়ে অখিলেশ যাদব দাবি করেছিলেন কৃষ্ণ তাঁর স্বপ্নে এসে জানিয়ে গিয়েছেন বিজেপির পরাজয় আসন্ন। আজ অখিলেশের সেই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে ঘুমিয়ে থাকে, সেই স্বপ্ন দেখে। কিন্তু যে জেগে থাকে সে সঙ্কল্প নেয় সেই স্বপ্নপূরণের উদ্দেশ্যে। যে ভাবে সঙ্কল্প নিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ।’’ আজ কৃষক সমাজকে পাশে পেতে কেন্দ্র ও রাজ্যের যোগী সরকার কী ভাবে কৃষকদের উন্নয়নে একাধিক প্রকল্প, হাতে অর্থ পৌঁছে দেওয়া, বিদ্যুৎ, জল ও পাকা ঘরের মতো গ্রামীণ পরিকাঠামোর উন্নয়ন ঘটিয়েছে, তার বিবরণ তুলে ধরেন মোদী। অখিলেশ পাল্টা বলেন, ‘‘করোনায় আম আদমির পেটে ভাত জোটেনি। লোকে চাকরি-উপার্জন সব হারিয়েছেন। কৃষকেরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। মেরুকরণের জুজু দেখিয়ে প্রকৃত সমস্যা চেপে রাখতে পারবে না বিজেপি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন