ভোট-বাজেট নিয়ে মোদীর অভিযান আজ

বাজেট বক্তৃতার প্রথম অনুচ্ছেদ থেকেই শুরু হয়েছে নির্মলা সীতারামনের ভোট-বার্তা। তিনি জানান, যুবক, বৃদ্ধ, মহিলা, প্রথম ভোটের ভোটার থেকে প্রথমবার ভোটার— সকলেই না কি সিলমোহর বসিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীর কাজের সরকারে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০২:১২
Share:

—ফাইল চিত্র।

বাজেট আসলে কী?

Advertisement

আজ অর্থমন্ত্রীর বাজেট পেশের একদিন আগে উত্তরটা জানিয়েই দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ। বলেছিলেন, ‘‘ধনীদের উপর কর চাপিয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কাজে লাগানোই বাজেট।’’ আজ বাজেটেও সেই বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী—ধনীর উপর কর চাপিয়ে, মধ্যবিত্তের সামান্য সুরাহা করে, গ্রাম-গরিব-মহিলার উপরে সদয় হয়েছেন তিনি। বাজেট বক্তৃতায় হিসেবপত্র না থাকুক, পরতে পরতে ভোটের বার্তা রয়েছে। ঠিক যে কথাটি গত কাল জানিয়েছিলেন বিজেপির এক শীর্ষ নেতা, ‘‘আগামী লোকসভা ভোটের আগে আরও ৫-৬ শতাংশ ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর প্রথম ধাপই হবে বাজেট।’’

বাজেট বক্তৃতার প্রথম অনুচ্ছেদ থেকেই শুরু হয়েছে নির্মলা সীতারামনের ভোট-বার্তা। তিনি জানান, যুবক, বৃদ্ধ, মহিলা, প্রথম ভোটের ভোটার থেকে প্রথমবার ভোটার— সকলেই না কি সিলমোহর বসিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীর কাজের সরকারে। সকলেই দেশকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সে কারণেই বাজেট বক্তৃতাতেই দেশের জনতাকে অধিকার নয়, কর্তব্যের জন্য এগিয়ে এসে দেশসেবার আহ্বান জানালেন অর্থমন্ত্রী। যে রাজনৈতিক আবেদন প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার জেতার পর থেকে করে আসছেন।

Advertisement

শুধু তা-ই নয়, বাজেট ভাগ করা হল এমনভাবে, যাতে যাঁদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবেই দেখছে বিজেপি, তাঁদের প্রাপ্তি স্পষ্ট হয়। যেমন, ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি, গ্রামীণ ভারত, শহুরে ভারত, যুবক, মহিলা, সহজ জীবন ইত্যাদি। হিন্দিতে সাবলীল না হওয়ায় নির্মলা যেগুলি হিন্দিতে বলতে পারেননি, বাজেট শেষে প্রধানমন্ত্রী, সভাপতি অমিত শাহ, কার্যকরী সভাপতি জে পি নড্ডা তা পুষিয়ে দিলেন। আগামিকাল এই বাজেটকে পুঁজি করেই বিজেপির নতুন ‘সদস্যতা অভিযান’ শুরু করছেন প্রধানমন্ত্রী। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে, নিজের কেন্দ্র বারাণসী থেকে। একইসঙ্গে বৃক্ষরোপণ করেও নতুন অভিযানের ডাক দেবেন।

তার আগে আজ এক ভিডিয়ো বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে দলিত, কৃষক, শোষিত, বঞ্চিতদের ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে তাঁদেরই দেশের উন্নয়নে ‘পাওয়ার হাউস’ করা হবে। ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির স্বপ্নপূরণের শক্তি এখান থেকেই মিলবে। এ বাজেট গ্রাম-গরিব, মধ্যবিত্ত, যুবক, মহিলাকে শক্তি দেবে। দিশা ও গতি ঠিক, লক্ষ্যে পৌঁছনোও নিশ্চিত।’’

বিজেপির এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, ‘‘এ বারের ভোটে দেখা গিয়েছে, গ্রামীণ এলাকায় বিজেপির ভোট বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। শহর ও গ্রামের ভোটের ব্যবধানও অনেকটা কমে এসেছে। আর সেটি সম্ভব হয়েছে দলিত, ওবিসি-সহ সব জাতির সমর্থন আগের থেকে বেড়ে যাওয়ায়। যে কারণে সব মিলিয়ে ২০১৪ সালের তুলনায় ৬ শতাংশের বেশি ভোট গত লোকসভা ভোটে পেয়েছে বিজেপি। এ বার তা আরও বাড়ানোই দলের লক্ষ্য। ফলে ভোট সদ্য শেষ হলেও এটি আদপে ভোটেরই বাজেট।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন