ভোটে কর্নাটক

রাহুলের ঘোষণাই হাতিয়ার মোদীর

রাহুল গাঁধীর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০৫:২০
Share:

প্রচার: সভামঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার কর্নাটকের চিকমাগালুরে। ছবি: পিটিআই।

পরের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস সবচেয়ে বড় দল হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতেই পারেন— রাহুল গাঁধীর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

বুধবার কর্নাটকের মোদীর চারটি সভা ছিল। বেঙ্গারপেট-এ প্রথম সভাতেই রাহুলের নাম না করে মোদী বলেন, ‘‘গত কাল কর্নাটক ও দেশের রাজনীতিতে একটা ঘটনা ঘটেছে। আচমকাই এক জন একটি ঘোষণা করেছেন। যাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তাঁদের তোয়াক্কাই করেননি। শরিকদের কথাও ভাবেননি।’’ এর পরে বারবার রাহুল তথা গাঁধী পরিবারকে নিশানা করতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘শরিকদের উপর এতটুকু আস্থা নেই নামী পরিবারের ওই নেতার। এমনকী কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের প্রশ্নকেও উনি তোয়াক্কা করেননি। আকাশছোঁয়া ঔদ্ধত্য দেখিয়ে শুধু জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১৯-এ প্রধানমন্ত্রী হবেন।’’ সকাল থেকে সন্ধে রাহুল শুধু প্রধানমন্ত্রীর কুর্সির কথাই ভেবে চলেছেন এবং ‘নামী পরিবারের এমন অপরিণত কাউকে’ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ মেনে নিতে পারবে কিনা, সে প্রশ্ন তোলেন মোদী।

মোদীর আক্রমণের কিছু ক্ষণ পরেই বেঙ্গালুরুতে একটি জনসভায় পাল্টা জবাব দেন রাহুল। বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আসল প্রশ্নগুলির জবাব কখনওই দেন না। সব সময়েই আমাদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করে করতে থাকেন।’’ ওই সভাতে কংগ্রেসের নেতারা রাহুলকে ভবিষ্যতের প্রধানমমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরে স্লোগানও দেন।

Advertisement

কর্নাটকের ভোটের ময়দানে দাঁড়িয়ে রাহুলকে প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের পিছনে বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনীতির জগতের অনেকেই। তাঁদের মতে, রাহুলের বিরুদ্ধে বিরোধী নেতাদের তাতিয়ে দিতে চেয়েছেন মোদী। গোরক্ষপুর, ফুলপুরের উপনির্বাচনের ফল দেখিয়ে দিয়েছে, বিরোধীরা একজোট হলে কতটা সঙ্কটের মধ্যে পড়তে হয় বিজেপিকে। আর লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে কংগ্রেস যে ভাবে অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে চলেছে, তা চিন্তায় ফেলেছে মোদী শিবিরকে। এই পরিস্থিতিতেই রাহুলের মন্তব্যকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছেন মোদী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গদি থেকে আমাকে সরাতে বড় বড় নেতারা আলোচনা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর গদিতে বসার জন্য অনেকে ৪০ বছর অপেক্ষা করেছেন। এঁদের অনেকের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এই সব নেতাকে অন্ধকারে রেখে কী ভাবে এক জন নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরেন? এটা কি জোটের প্রতি অনাস্থা নয়? ’’

বিরোধী জোটের অনেকেরই ভরসা রয়েছে রাহুলের নেতৃত্বে। কিন্তু এ ব্যাপারে বিরোধী নেতাদের একাংশ এখনও প্রস্তত নন। চলছে তৃতীয় মোর্চার প্রস্তুতিও। সেই সুযোগকেই আজ ব্যবহার করতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসকে নিশানা করে মোদী দাবি করেন, মনমোহন সিংহের জমানায় সরকারের রিমোট কন্ট্রোল ছিল সনিয়া গাঁধীর হাতে। তবে যে চার বছর তিনি দেশ চালিয়েছেন, সেখানে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থেকেছে মানুষ।

প্রধানমন্ত্রীর এই দাবির জবাব দিয়েছে কংগ্রেস। আনন্দ শর্মার মন্তব্য, ‘‘বিজেপিতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন মোদী, শাহ। আর সরকারের রিমোট কন্ট্রোল রয়েছে নাগপুরে সঙ্ঘের দফতরে।’’ মোদীর অভিযোগ খারিজ করে শর্মার দাবি, ‘‘কংগ্রেস শরিকদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন