আফ্রিকায় মুখ পুড়বে হামলায়, উদ্বেগে সরকার

আফ্রিকাবাসীদের উপরে হামলা নিয়ে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হল কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর নজীব জঙ্গের সঙ্গে কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এই ধরনের হামলায় কড়া পদক্ষেপ করতে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজনাথ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৬ ০৩:৪৭
Share:

আফ্রিকাবাসীদের উপরে হামলা নিয়ে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হল কেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর নজীব জঙ্গের সঙ্গে কথা বলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। এই ধরনের হামলায় কড়া পদক্ষেপ করতে দিল্লি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজনাথ।

Advertisement

সম্প্রতি কঙ্গোর বাসিন্দা এম কে ওলিভার নামে এক যুবককে বসন্তকুঞ্জ এলাকায় পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কিছু যুবকের বিরুদ্ধে। একে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখানোরই চেষ্টা করছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু কূটনৈতিক চাপ বাড়ায় আফ্রিকার দেশগুলি। আবার তার পরেই বেশ কিছু আফ্রিকাবাসীর উপরে হামলার ঘটনা সামনে এসেছে।

হরিয়ানার সীমানায় মেহরৌলির কাছে ছত্তরপুরে আফ্রিকাবাসীদের উপরে হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লিউচি নামে এক নাইজেরীয় নাগরিক ও তাঁর বন্ধুর সঙ্গে এক দল লোকের হাতাহাতি হয়। লিউচির অভিযোগ, কোনও কারণ ছাড়াই এক দল লোক তাঁদের উপরে হামলা করে। জ্যাসন নামে আর এক নাইজেরীয় জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পরে এলাকার অন্য আফ্রিকাবাসীদের উপরেও হামলা চালায় জনতা।

Advertisement

এর কিছু ক্ষণ পরে আক্রান্ত হন উগান্ডার বাসিন্দা কেনেথ ইগবিনোসা, তাঁর স্ত্রী কেট ও তাঁদের ছেলে। কেনেথের অভিযোগ, ক্রিকেট ব্যাট ও লাঠি দিয়ে তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। হামলাকারীরা বর্ণবিদ্বেষী কথাবার্তা বলছিল বলেও দাবি করেছেন কেনেথ। প্রায় একই সঙ্গে হামলা হয় উগান্ডার অন্য দুই নাগরিক ভিকি ও তাঁর ভাই পিয়ের এবং ক্যামেরুনের শামিরা ও তাঁর এক বন্ধুর উপরে। শামিরার আবার দাবি, দুষ্কৃতীরা ‘আফ্রিকায় ফিরে যাও’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল।

এর পরে নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। কারণ, আফ্রিকাবাসীদের উপরে হামলার ঘটনাকে ঘিরে অসহিষ্ণুতা বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিতে পারে বলে মনে করছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে মুখ খুলেছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি।

রাজনাথের নির্দেশের পরে অবশ্য পদক্ষেপ করেছে দিল্লি পুলিশ। ইতিমধ্যেই মেহরৌলি থেকে বাবু, ওম প্রকাশ, অজয় ও রাহুল নামে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক হয়েছে আরও চার জন। তাদের মধ্যে এক জন নাবালকও রয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে মারধর ও ভীতি প্রদর্শনের মামলা করেছে পুলিশ। তবে হামলায় ব্যাট বা রড ব্যবহারের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের মতে, সে ক্ষেত্রে আহতদের ক্ষতের ধরন অন্য রকম হত।

বিদেশনীতির ক্ষেত্রে আফ্রিকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় দিল্লি। ওই মহাদেশে চিনের প্রভাবের মোকাবিলা করতে গত বছরে ভারত-আফ্রিকা শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করেছিল মোদী সরকার। সেই সূত্র ধরেই আগামিকাল আফ্রিকার মরক্কো এবং তিউনিসিয়া সফরে যাচ্ছেন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। কিন্তু দিল্লিতে আফ্রিকাবাসীদের উপরে হামলা কূটনৈতিক সমস্যা বাড়াতে পারে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়েরও আফ্রিকা সফরে যাওয়ার কথা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আদৌ রাষ্ট্রপতির যাওয়া হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আপাতত আনসারির সফরে বিষয়টি মাথাচাড়া দেয় কিনা তা দেখতে চায় সাউথ ব্লক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন