তথ্য বিনিময়ে নয়া মোবাইল অ্যাপ বরাকে

সরকারি কর্মসূচি, নিত্যদিনের ঘটনা-দুর্ঘটনা বরাক উপত্যকার সব এলাকার মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে ‘মোবাইল অ্যাপ’ তৈরির প্রকল্প হাতে নিল শিলচর এনআইটি। সঙ্গে প্রেরণা ভারতী সামাজিক আর্থিক উন্নয়ন ও গবেষণা সমিতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৯:৩১
Share:

সরকারি কর্মসূচি, নিত্যদিনের ঘটনা-দুর্ঘটনা বরাক উপত্যকার সব এলাকার মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে ‘মোবাইল অ্যাপ’ তৈরির প্রকল্প হাতে নিল শিলচর এনআইটি। সঙ্গে প্রেরণা ভারতী সামাজিক আর্থিক উন্নয়ন ও গবেষণা সমিতি।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর ‘স্টার্টআপ ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে ওই কাজের জন্য দুই সংস্থার মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। শিলচর এনআইটি-র ডিরেক্টর এন ভি দেশপান্ডে, রেজিস্ট্রার এ কে বড়ভুঁইঞা ও প্রোজেক্ট-কোঅর্ডিনেটর ওয়াসিম আরিফ, প্রেরণা ভারতীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার, সম্পাদক সীমা কুমার ও জওহরলাল পান্ডে তাতে স্বাক্ষর করেন।

ডিরেক্টর দেশপান্ডে জানান, ভারতীয় যুবাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অধিকতর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘স্টার্টআপ ইন্ডিয়া’ প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে রয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রক। দেশের ৩৮টি প্রতিষ্ঠানকে সে জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। তাতে রয়েছে শিলচর এনআইটি-ও। উত্তর-পূর্বের ১০টি প্রকল্পে কারিগরী সহায়তা-সহ সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের। সে জন্য তারা কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক থেকে ২৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুরি পেয়েছেন।

Advertisement

দেশপান্ডের কথায়, ‘‘দশটি প্রকল্পের জন্য পৃথক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।’’ তিনি জানান, প্রেরণা ভারতী ছাড়াও কাছাড় ক্যানসার হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সোসাইটি একটি প্রকল্পে কাজ করবে। ‘জিরো-পলিউশন’ ইঞ্জিন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের এক গবেষকের। মণিপুরের উওম্যান ইনকাম জেনারেটিং সেন্টার-এরও একটি প্রকল্পে অনুমোদন মিলেছে। রয়েছে চা-য়ের টিসু কালচার প্রকল্পও। ভোটের সময় পোল-ফ্রেন্ড নামে মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে নির্বাচন কমিশনকে চমকে দিয়েছিল এনআইটি-র তিন পড়ুয়া। তাঁরা এখন একে স্টার্টআপের অন্তর্ভুক্ত করে আরও কাজ করতে চাইছেন।

মোবাইল অ্যাপ প্রকল্পের কথায় প্রেরণা ভারতীর সম্পাদিকা সীমা কুমার বলেন, ‘‘দেশের রাজধানী থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চল অনেক দূরে। যে কোনও সরকারি ঘোষণা মানুষের কাছে পৌঁছতে বেশ সময় লাগে। প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তি মানুষ জানতেই পারেন না। টিভিতে প্রচারিত হলেও লোডশেডিঙের দরুন সে সব জানা যায় না। পত্রপত্রিকা প্রকাশে ২৪ ঘণ্টার ব্যাপার।’’ তাঁর বক্তব্য, পার্বত্য ও গ্রামীণ এলাকায় পত্রিকা দুর্লভও বটে। সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছাড়াও অন্যান্য খবরও মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। সেগুলি সময়মত জানতে পারলে মানুষের উপকার হয়। তাই তাঁরা হিন্দিতে এমন এক অ্যাপ তৈরি করতে চান, যা মুহূর্তে মোবাইলের মাধ্যমে সমস্ত খবর সবার কাছে পৌঁছে দেবে। নয়াদিল্লির সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার রাজেশ মালা ও স্থানীয় হিন্দি শিক্ষক সৌরভ কৈরিকে তাঁরা প্রজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। সীমা কুমার আশাবাদী, তাঁদের ভাবনার সঙ্গে এনআইটি-র প্রযুক্তি জুড়লে এই অ্যাপ তৈরি মোটেও কঠিন নয়। এক বছরে অন্তত ১০ থেকে ১৫ হাজার গ্রাহকের কাছে তাঁরা পৌঁছবেন। পরের বছর তা ৫০ হাজার ছাড়াবে। গ্রাহকদের কাছ থেকে সামান্য টাকা আদায় করলে প্রত্যন্ত এলাকাতেও লোক নিয়োগ করা সম্ভব হবে। এতে বরাক উপত্যকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। ডিরেক্টর দেশপান্ডেও এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘‘জনসাধারণের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা বলে শিলচর এনআইটি তাতে শরিক হচ্ছে। এই অ্যাপ দ্বিমুখী হবে। এক দিকে যেমন দৈনন্দিন খবর ও সরকারি তথ্য জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। জনসাধারণের কথাও শাসকশক্তির কাছে পৌঁছনো যেতে পারে।’’ তাঁর আশা, এতে এই অঞ্চলে সাংবাদিকতার নতুন দিক উন্মোচিত হবে। বাড়বে জনসচেতনতা এবং রাষ্ট্রভাষার প্রচারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন