সিভিতে মাত্র একটি অনুচ্ছেদ। আর তার জোরেই পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের (এফটিআইআই) গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান পদে বসেছেন ‘যুধিষ্ঠির’ খ্যাত গজেন্দ্র চৌহান। তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রশ্ন করার পরে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে, তার সারমর্ম এটাই। গজেন্দ্রর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চেয়েছিলেন কেউ। তার জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘‘গজেন্দ্র চৌহান এমন এক জন অভিনেতা যাঁকে মহাভারত সিরিয়ালে যুধিষ্ঠিরের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়াও প্রায় দেড়শোটি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। তাঁকে দেখা গিয়েছে ৬০০টিরও বেশি সিরিয়ালে।’’ বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়েছে।
এই পদের জন্য আর কার কার কথা ভাবা হয়েছিল, ২৮১ পাতার ওই রেকর্ডে লেখা রয়েছে সে কথাও। তার মধ্যে গজেন্দ্রর সিভিতেই এক অনুচ্ছেদের যোগ্যতা লেখা। অমিতাভ বচ্চন, জয়া বচ্চন, জাহ্নু বরুয়া, বিধু বিনোদ চোপড়া, আমির খান, রাজু হিরানি, রমেশ সিপ্পি, গোবিন্দ নিহালিনি, আদুর গোপালকৃষ্ণনদের কথা যে গত বছর এফটিআইআইয়ের প্রেসিডেন্টের পদের জন্য ভাবা হয়েছিল, তাও জানিয়েছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে কাল দিল্লিতে প্রতিবাদ দেখাবেন বলে জানিয়েছেন এফটিআইআইয়ের পড়ুয়ারা।
বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতা গজেন্দ্র চৌহানকে গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যানে পদে বসানো নিয়ে গোলমাল চলছে এফটিআইআইয়ে। মহাভারত সিরিয়ালে যুধিষ্ঠিরের ভূমিকায় অভিনয় করার ‘যোগ্যতা’ নিয়ে কেউ কী ভাবে এই পদে বসতে পারে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন পড়ুয়ারা। গজেন্দ্র ইস্তফা না দিলে তাঁরা ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানান ছাত্ররা।
আগেও একাধিক বার কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন ছাত্ররা। কিন্তু এক বার বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে আর আলোচনার রাস্তায় হাঁটতে চাইছে না কেন্দ্র। ছাত্রদের রীতিমতো হুমকির সুরেই তারা বলেছে, ক্লাসে ফিরে না এলে ছাত্রদের প্রতি কঠোর হতে বাধ্য হবে তারা। প্রয়োজনে তাঁদের বহিষ্কার করা হতে পারে এফটিআইআই থেকে। কিন্তু এত হুঁশিয়ারিতেও টলানো যায়নি ছাত্রদের। গত ৫২ দিন ধরে এফটিআইআইয়ে ক্লাস বয়কট চলছে। গজেন্দ্র নিজেও বহুবার জানিয়েছেন, কেন্দ্র তাঁকে যোগ্য মনে করে বলেই এই পদে বেসেছেন তিনি। তাই কোনও মতেই ইস্তফা দেবেন না।
আজ পুণে থেকে দিল্লি রওনা হয়েছে ৮০ জন ছাত্রের একটি দল। এফটিআইআই স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এফএসএ)-এর তরফে রঞ্জিত নায়ার জানিয়েছেন, কাল যন্তরমন্তর থেকে পার্লামেন্ট স্ট্রিটের দিকে যাবে মিছিল। রাস্তায় আরও কয়েকটি সংস্থা তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবে।