Baby Trafficking in Uttar Pradesh

ফর্সা? ছেলে না মেয়ে? দর ঠিক হয় তার নিরিখে, সন্তানহীন দম্পতিদের ৫ লাখে সদ্যোজাত বিক্রি! চক্র ফাঁস উত্তরপ্রদেশে

পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি বাচ্চা চুরি করা হত। তার পর তাদের বিক্রি করা হত। তবে ফর্সা সদ্যোজাতের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৫ ১৫:০৩
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গায়ের রং কি? ফর্সা না কালো? ছেলে না কি মেয়ে? তার নিরিখেই সদ্যোজাতের দর উঠত। তার পর সন্তানহীন দম্পতিদের কাছে দেড় থেকে পাঁচ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হত। বাচ্চা কেনাবেচার এমনই এক বড় চক্র ফাঁস হল উত্তরপ্রদেশের গাজ়িয়াবাদে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি বাচ্চা চুরি করা হত। তার পর তাদের বিক্রি করা হত। তবে ফর্সা সদ্যোজাতের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। এই ঘটনায় দুই মহিলা-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃতেরা শিশু চুরি করে বিভিন্ন রাজ্যে তা চড়া দামে পাচার করে দিতেন। সদ্যোজাতের গায়ের রং ফর্সা হলে তার দাম উঠত পাঁচ লক্ষ টাকা। তবে দেড় লক্ষ টাকা থেকে বিক্রির দাম শুরু হত।

পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে মোরাদাবাদ হাসপাতালের এক নার্স এবং এক আশাকর্মী জড়িত রয়েছেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, হাসপাতাল থেকে ওই নার্সের মাধ্যমে বাচ্চা গায়েব করা হত। আশাকর্মীকেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই কাজে লাগানো হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতেরা হলেন, নাভেদ আনসারি, আফসার, স্বাতী ওরফে সায়েস্তা এবং সন্ধ্যা চৌহান। তদন্তে জানা গিয়েছে, মুজফ্‌ফরনগরে ‘শুভার্থী ম্যারেজ ব্যুরো’ নামে ঘটকালির সংস্থা খুলে বসেছিলেন সন্ধ্যা। অন্য দিকে, মোরাদাবাদে ‘পরী ম্যারেজ ব্যুরো’ নামে ঘটকালির সংস্থা খুলেছিলেন স্বাতী। ত্রোনিকা সিটিতে মাংসের দোকান রয়েছে আফসারের। আর নাভেদ দিনমজুরের কাজ করেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, গত তিন বছরে এই দলটি ১০টি সদ্যোজাতকে পাচার করেছে। বৃহস্পতিবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লোনি এলাকা থেকে পাচারচক্রের এক জনের বাড়ি থেকে দেড় বছরের একটি শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ। শিশুটির বাবা রশিদ কয়েক দিন আগেই তাঁর সন্তানের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। শিশুটি বাড়ির বাইরে খেলছিল। তার পরই উধাও হয়ে যায়। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করতেই বাচ্চা চুরি এবং সদ্যোজাত পাচারচক্রের হদিস পায় পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাচ্চাটিকে মোরাদাবাদের এক দম্পতির কাছে বিক্রির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। আড়াই লক্ষ টাকা দর স্থির হয়েছিল। কিন্তু কোনও কারণবশত শিশুটিকে বিক্রি করেননি পাচারকারীরা। পরে তাঁরা আমরোহায় এক দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর কাছে শিশুটিকে বিক্রির কথা পাকা হয়ে গিয়েছিল। বিক্রির আগে শিশুটিকে ধৃত অভিযুক্ত নাভেদের বাড়িতে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এই পাচারচক্র দিল্লি, বিজনৌর, মোরাদাবাদ, রুরকি, আমরোহা, জম্মু-কাশ্মীর এমনকি নেপাল পর্যন্ত সক্রিয়।

কী ভাবে কাজ করত এই গ্যাং?

পুলিশ জানিয়েছে, কোনও শিশুকে বাড়ির বাইরে খেলতে দেখলে বা পার্কে দেখলে তাদের ছবি তুলে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করত এই দল। বিশেষ করে হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে। স্বাতী এবং সন্ধ্যার কাজ ছিল সন্তানহীন দম্পতিদের খুঁজে তাঁদের সেই বাচ্চার ছবি দেখানো। তাঁরা রাজি হলে তখন দর ঠিক হত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement