Nitin Nabin

বিজেপির দ্বিতীয় সারিকে চাপে ফেলেছেন নবীন

গত ১৪ ডিসেম্বর, রবিবার বিজেপির কার্যকরী সভাপতি হিসাবে নিতিন নবীনের নাম ঘোষণা করে বিজেপি। সব কিছু ঠিকঠাক চললে পৌষ মাস শেষ হলে তিনিই দলের সভাপতি হতে চলেছেন।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৯
Share:

নিতিন নবীন। — ফাইল চিত্র।

জেনারেশন জি-র কথা মাথায় রেখে বিজেপির কার্যকরী সভাপতি হিসাবে নিতিন নবীনের স্থলাভিষেক প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে দলের দ্বিতীয় সারির নেতাদের। নিতিন নবীনের দায়িত্বপ্রাপ্তির মাধ্যমে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন, প্রশাসনিক নেতৃত্ব বর্ষীয়ান নেতাদের হাতে থাকলেও দলের সাংগঠনিক নেতৃত্বের রাশ থাকবে অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রজন্মের হাতেই। এর ফলে দ্বিতীয় সারির নেতারা দলে ভবিষ্যতে কত দিন কার্যকরী ভূমিকায় থাকবেন, সেই প্রশ্নও উঠে গিয়েছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর, রবিবার বিজেপির কার্যকরী সভাপতি হিসাবে নিতিন নবীনের নাম ঘোষণা করে বিজেপি। সব কিছু ঠিকঠাক চললে পৌষ মাস শেষ হলে তিনিই দলের সভাপতি হতে চলেছেন। সূত্রের মতে, ঘোষণার আগের রাতে বিজেপির অন্দরমহলে চর্চা ছিল, বিহার নির্বাচনে বিজেপির ভাল ফলের পিছনে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিলেন এমন দুই নেতা— বিনোদ তাউড়ে ও ধর্মেন্দ্র প্রধানের মধ্যে একজন সভাপতির দায়িত্ব পেতে চলেছেন। সেই মতো আশায় বুক বেঁধেছিল দুই শিবিরই। কিন্তু নিতিন নবীনের মতো অপেক্ষাকৃত কম ওজনদার, জাতীয় রাজনীতিতে প্রায় অপরিচিত এক নেতাকে বেছে নিয়ে সবাইকে চমকে দেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। মাত্র ৪৫ বছরের নিতিনকে বেছে নিয়ে দল বুঝিয়ে দেয়, দেশের তরুণ প্রজন্মকে মাথায় রেখেই আগামী দিনে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। কিন্তু ওই একই সিদ্ধান্ত দলের দ্বিতীয় সারির যে নেতারা রয়েছেন (ধর্মেন্দ্র প্রধান, ভূপেন্দ্র যাদব, বিনোদ তাউড়ে, পীযূষ গয়াল, অশ্বিনী বৈষ্ণব) তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নতুলে দিয়েছে।

দলে মোদীর সমসাময়িক বা মোদীর থেকে সামান্য ছোট প্রথম সারির নেতারা, যেমন মনোহরলাল খট্টর, শিবরাজ সিংহ চৌহান, রাজনাথ সিংহ বা নিতিন গডকড়ীরা বর্তমানে কেন্দ্রে মন্ত্রী থাকলেও দল যে ভাবে কমবয়সীদের প্রাধান্য দিচ্ছে, তাতে ওই নেতাদের পরের লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়া কঠিন। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে দলের হাল ধরতেন দ্বিতীয় সারির নেতারা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, ওই দ্বিতীয় সারির নেতাদের অধিকাংশই হলেন অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ। কিন্তু নিতিনের অন্তর্ভুক্তি এবং ভবিষ্যতে নিতিনের নিজস্ব দল তৈরি হওয়ার পরে দলে তাঁদের গুরুত্ব এবং আসন কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে রীতিমতো ধন্দে দ্বিতীয় সারির নেতারা। আজ দ্বিতীয় সারির এক কেন্দ্রীয় নেতাকে এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। যদিও তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘অমিত শাহ ৪৯ বছরে, অটলবিহারী বাজপেয়ী পঞ্চাশের ঘরে পৌঁছনোর আগে সভাপতি হন। বর্তমানে বিজেপি এমন একটি দল, যারা তৃতীয় সারির নেতৃত্বকে গড়ার পথে হাঁটছে। অন্য কোনও দল ওই উদ্যোগ নেয়নি।’’

নিতিনের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আরএসএসের একটি অংশকেও বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী। নিতিন প্রশ্নে মোদী-ভাগবতের মতৈক্য হলেও সূত্রের মতে, আরএসএসের দক্ষিণের এক শীর্ষ নেতা চেয়েছিলেন, এ বারের বিজেপি সভাপতি হোন দক্ষিণ থেকে। যাতে বিজেপির উপর আরএসএসের, বিশেষ করে ওই নেতার প্রভাব বৃদ্ধি পায়। সূত্রের মতে, সেই কারণেই কিছু মাস আগে উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য আরএসএসের একাংশ উত্তর ভারতের এক নেতার নাম প্রস্তাব করেছিল। যাতে সায় ছিল বিজেপির একটি অংশেরও। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছলে তিনি পত্রপাঠ তা খারিজ করে তামিলনাড়ুর সিপি রাধাকৃষ্ণণকে বেছে নেন। তখনই এ যাত্রায় দক্ষিণ থেকে বিজেপি সভাপতির হওয়ার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন