হাইলাকান্দিতে আয়োজিত মহান উনিশের স্মরণ অনুষ্ঠানে আসাম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা বাতিলের দাবি উঠল। আজ হাইলাকান্দিতে একাদশ ভাষাশহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতীশ ভট্টাচার্য ওই দাবি তোলেন। এ দিন শোভাযাত্রার পর ভাষাশহিদ স্মারকস্থলে শহিদ স্মরণে আলোচনা সভা করা হয়। সেখানে নীতীশবাবু বলেন, ‘‘অসমে বাঙালি-সহ অন্য ভাষাভাষী মানুষ এখন গভীর সঙ্কটে রয়েছেন। তাঁদের স্বার্থেই আসাম চুক্তির ৬ নম্বর ধারা বাতিল করতে হবে।’’ নীতীশবাবুর বক্তব্য, ওই ধারার জন্য অসমে বঙ্গভাষীরা বিপন্ন। ‘ডি-ভোটার’ (ডাউটফুল ভোটার), জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নবীকরণ ও নাগরিকত্বের অন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে আসাম চুক্তির ওই ধারার জন্যই। ওই ধারা বাতিলের জন্য অসমের বঙ্গভাষীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেন নীতীশবাবু। এ ছাড়া আত্মসমর্পণকারী আলফা জঙ্গিদের অসমকে উপজাতি রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত করার দাবির তীব্র সমালোচনা করেন।
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের শহর আঞ্চলিক কমিটি এবং পুরসভার উদ্যোগে আয়োজিত শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হীরকজ্যোতি চক্রবর্তী। শিলচরের তারাপুর রেল ষ্টেশনের নাম একাদশ ভাষাশহিদ না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল রায়। এ জন্য তিনি উপত্যকার বঙ্গভাষী মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের দিকেই আঙুল তোলেন। সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা বিজয়কুমার ধর অসম সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘১৯৬০ সালে এ রাজ্যে অসমিয়াদের আগ্রাসন শুরু হয়েছিল। তা এখনও চলছে।’’ অসমিয়া ভাষার আগ্রাসন রোধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়ে অন্য বক্তারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পরিতোষচন্দ্র দত্ত, হিলালউদ্দিন লস্কর, ইশাক আলি বড়ভুঁইয়া, পিনাকপানি ভট্টাচার্য, অনিন্দ্য নাথ, লাবলু চৌধুরী।
এ দিন মহান উনিশের স্মরণে রক্তদান করেন ৩৬ জন। বরাক ভ্যালি ভল্যান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম ও দক্ষিণ পল্লী দুর্গাপূজা কমিটি ওই শিবিরের আয়োজন করেছিল। মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি-সহ বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শহিদ দিবস পালন করে।