মোদীকে রুখতে মোদীরই বক্তৃতা, ছক নীতীশের

মোদীর কথাতেই মোদীকে রুখতে চান নীতীশ কুমার! লোকসভা ভোটের আগে হরেক জনসভায় নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার ‘রেকর্ডিং’ নিয়েই তাই বিহার সফরে বেরিয়েছেন জেডিইউ শীর্ষ নেতা। মোদীর পুরনো ভাষণ শুনিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ছেন “বিদেশের ব্যাঙ্ক থেকে কালো টাকা দেশে এল কি? বিহারের জন্য কী সাহায্য করল কেন্দ্র?”

Advertisement

স্বপন সরকার

পটনা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০২:৫২
Share:

মোদীর কথাতেই মোদীকে রুখতে চান নীতীশ কুমার!

Advertisement

লোকসভা ভোটের আগে হরেক জনসভায় নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতার ‘রেকর্ডিং’ নিয়েই তাই বিহার সফরে বেরিয়েছেন জেডিইউ শীর্ষ নেতা। মোদীর পুরনো ভাষণ শুনিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ছেন “বিদেশের ব্যাঙ্ক থেকে কালো টাকা দেশে এল কি? বিহারের জন্য কী সাহায্য করল কেন্দ্র?”

বিধানসভা ভোটের ১১ মাস আগে আজ এই ছকেই মোদী তথা বিজেপির বিজয়রথ রুখতে মাঠে নামলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটারদের মন জিততে শুরু করলেন দলের ‘সম্পর্ক-যাত্রা’।

Advertisement

প্রথম দিন নীতীশের দলীয় কর্মিসভা ছিল পশ্চিম চম্পারণে। ভিড়ে ঠাসা ময়দানে নরেন্দ্র মোদীকে তিনি আক্রমণ করেন। কালো টাকা দেশে ফেরাতে মোদীর প্রতিশ্রুতির কথা তোলেন নীতীশ। বক্তৃতা থামিয়ে টেপ-রেকর্ডার চালিয়ে দেন। মাইকে ভেসে ওঠে নরেন্দ্র মোদীর কণ্ঠস্বর ‘বিদেশের ব্যাঙ্কে যে কালো টাকা রয়েছে, দিল্লির ক্ষমতা পেলে ১০০ দিনের মধ্যে তা দেশে ফিরিয়ে আনব। তাতে ভারতের প্রত্যেক নাগরিক ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে পাবেন।’ টেপ বন্ধ করেই প্রশ্ন তোলেন নীতীশ, “চিনতে পারছেন কার আওয়াজ? নয়াদিল্লির মসনদে ১৫০ দিন ধরে বসে রয়েছেন মোদী। কোথায় গেল কালো টাকা?” প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলন, “মানুষ জানতে চাইছেন কবে টাকা পাওয়া যাবে? টাকাটা কি মোদীজি চেকে দেবেন না কি নগদে?” হাততালিতে ফেটে পড়ে চম্পারণের সভার হাজার পাঁচেক মানুষ।

বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদার দাবিতে বহু দিন ধরেই সরব নীতীশ। ভোটবাক্সের জন্য তাঁর কাছে এটি বড় ‘অ্যাজেন্ডা’। এ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ভোট প্রচারে মোদী কী বলেছিলেন, তা-ও শোনান নীতীশ। মাইকে ফের শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমাদের ক্ষমতায় আনলে বিহারের উন্নয়নে সাহায্য করব। বিশেষ মর্যাদা হোক বা আর্থিক সহায়তা। বিহারের দিকে বিশেষ ভাবে নজর রাখব।’ টেপ থামিয়ে নীতীশ বলেন, “রাজ্যের কেন্দ্রীয় আর্থিক বরাদ্দ ক্রমে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় সড়ক নির্মাণেরও টাকা মিলছে না। কমেছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা। অর্থসঙ্কটের জেরে ইন্দিরা আবাস যোজনাও সমস্যায় পড়েছে।” মোদীর দিকে প্রশ্ন ছোড়েন নীতীশ “একেই কি বিশেষ নজর বলে?” হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “দিল্লির কাছে ভিক্ষা নেব না। লড়ে দাবি আদায় করব।”

মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার প্রসঙ্গও তোলেন নীতীশ। তিনি বলেন, “লোকসভার জনাদেশ দেখেই বুঝেছি রাজ্য শাসনে কিছু ভুল করেছি। ঠিকমতো কাজ করতে পারিনি। তাই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।” মানুষের আরও কাছে পৌঁছতেই তিনি সম্পর্ক-যাত্রায় বের হয়েছেন বলে নীতীশ মন্তব্য করেন। জানান, ফের জনতা তাঁকে সুযোগ দিলে বিহারকে উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। একইসঙ্গে তিনি বলেন, “পরাজয় হলেও আপনাদের সঙ্গেই থাকব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন