লালু প্রসাদ। শুক্রবার রাঁচীতে। ছবি: পিটিআই।
ভোরের আলো ফোটার আগেই হিন্দি-বলয় তোলপাড়। পাঁচ শহরে লালুপ্রসাদ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বারোটি ডেরায় হানা দিয়েছে সিবিআই।
দুপুরে রাঁচী, রাতে পটনায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়ছেন লালু। ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে সরব কংগ্রেস থেকে মমতা। পাশাপাশি, নীতীশ কুমারকে ‘সুশাসন’-এর পাঠ স্মরণ করাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু গোটা দিন গেল, নীতীশের মুখে রা নেই।
শরীর অসুস্থ বলে কাল বিকেল থেকেই রাজগিরে। যা শুনে দিল্লির অলিন্দেও গুঞ্জন। লালুর বাড়ির সিবিআই হানার খবর কি তিনি জানতেন? তাই পটনা ছেড়েছেন? সার্জিক্যাল স্ট্রাইক থেকে নোট বাতিল, আর হালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন— নীতীশ মোদীর দিকেই ঝুঁকে। সুশীল মোদীর দাবি, বিজেপির জন্য দরজা খোলা নীতীশের। আজ সেই সুশীল মোদীরাই সকাল থেকে প্রশ্ন তুলেছেন, উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী কী করে এখনও মন্ত্রিসভায়? ‘সুশাসন বাবু’ নীতীশ কীসের অপেক্ষায়? নীতীশের দলের নেতারা বলছেন, চার্জশিট-খাওয়া উমা ভারতীও তো রয়েছেন মোদী মন্ত্রিসভায়। সুতরাং তেজস্বীর চার্জশিট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা তো করাই যায়। যার অর্থ হাতে আরও তিন মাস।
সিবিআই-এর চাপে লালুকে দুর্বল করে বিজেপি আসলে নীতীশকে জোট ছাড়ার পথে ঠেলতে চাইছে। কিন্তু মোদীর শরণাপন্ন হওয়া নীতীশের পক্ষে বুদ্ধিমানের কাজ হবে কি? নাকি মহাজোটে থেকেই লালুর এই দুর্বলতার সুযোগে নিজের শক্তি বাড়ানো ভালো? সে ক্ষেত্রে জাতীয় স্তরেও নীতীশের জমি শক্ত হয়। বিরোধী জোটে থাকলে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীর দৌড়েও থাকতে পারবেন। এনডিএ-তে যা সম্ভব নয়।
নীরবে জল মাপছেন নীতীশ। দলকেও আপাতত চুপ থাকতে বলেছেন। বিহারের শাসক জোটের ভবিষ্যত নিয়ে নীতীশ কিছু না বললেও রাতে লালু কিন্তু বুঝিয়েছেন, জোট অটুট। তিনি বলেন, ‘‘মোদী-শাহ জোট ভাঙতে চাইছেন। কিন্তু আমাকে ফাঁসিতে ঝোলালেও মোদীর অহঙ্কার চুরমার করব। ২৭ অগস্ট বিরোধীদের মহাজোটের সভায় জনতা জবাব দেবে।’’
ফস্কে যাওয়া বিহারে ফের ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে মোদী-শাহ। শাসক জোট ভাঙলেই তা সম্ভব। বিজেপির এক নেতার কথায়, এখনও সিদ্ধান্ত না নিলে এ বার নীতীশের বিরুদ্ধেই প্রচারে নামবে দল। বলা হবে, দুর্নীতির সঙ্গে আপস করছেন নীতীশ।