Bihar Voter List Row

বিহারে বাদ ৫২ লাখ ভোটার: নীতীশ-তেজস্বী বাদানুবাদ! এক জেডিইউ সাংসদও প্রশ্ন তুললেন কমিশনের ‘বাস্তব জ্ঞান’ নিয়ে

বিহারে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ নিয়ে জাতীয় স্তরে বিতর্ক তুঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে সংসদেও আলোচনার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকারের কথাতেই কমিশন বিহারে ভোটার তালিকা পরিমার্জন করছে কমিশন। আসলে লক্ষ্য হল— ভোট চুরি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১৩:৫৪
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভোটার তালিকা থেকে ৫২ লাখ নাম বাদ নিয়ে বুধবার তোলপাড় হল বিহার বিধানসভা। বাদানুবাদে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। বিহার বিধানসভায় যখন শাসক-বিরোধী এই বিবাদ চলছে, সেই সময় দিল্লিতে ভিন্নসুরে বাজলেন নীতীশের দল জেডিইউ-র এক সাংসদ। তাঁর মন্তব্য, নির্বাচন কমিশনের কোনও বাস্তব জ্ঞানই নেই।

Advertisement

বিহারে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ নিয়ে জাতীয় স্তরে বিতর্ক তুঙ্গে। বিষয়টি নিয়ে সংসদেও আলোচনার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকারের কথাতেই বিহারে ভোটার তালিকা পরিমার্জন করছে কমিশন। আসলে লক্ষ্য হল— ভোট চুরি।

এই পরিস্থিতিতে বিজেপির শরিক জেডিইউ সাংসদ গিরিধারী যাদব প্রশ্ন তুললেন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে। সংসদ ভবনে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘‘কমিশনের কোনও বাস্তব জ্ঞান নেই। বিহারের ইতিহাস-ভূগোলই জানে না ওরা। আমারই ১০ দিন লেগেছে কাগজপত্র জোগাড় করতে। আমার ছেলে বিদেশে থাকে। এক মাসের মধ্যে কি ওর পক্ষে সব কাগজে সই করা সম্ভব?’’

Advertisement

ভোটার তালিকার নিবিড় সমীক্ষা বিহারবাসীর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন গিরিধারী। তিনি বলেন, ‘‘অন্তত ছ’মাস সময় দেওয়া উচিত ছিল।’’ তবে তাঁর এই মন্তব্য দলের কি না, তা স্পষ্ট করেননি সাংসদ। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি আমার ব্যক্তিগত মতামত দিচ্ছি। দল কী বলছে, সেটা বিষয় নয়। এটাই সত্য। আমি যদি সত্যি কথা বলতে না পারি, তা হলে কিসের জন্য সাংসদ হলাম?’’

মঙ্গলের পর বুধবারেও সংসদে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধীরা। সংসদের মকরদ্বারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। সেখানে ছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অখিলেশ যাদব। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ বন্ধ করতে হবে। এ ভাবে বিহারবাসীর ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।

তুমুল শোরগোল হয় বিহার বিধানসভাতেও। কমিশনের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তেজস্বী। বলেন, ‘‘এখন বর্ষাকাল। কী ভাবে ফর্ম ফিল আপ করবে লোকে? কেন আধার সংযুক্তিকরণ হচ্ছে না? কেন রেশন কার্ড সংযুক্তিকরণ হচ্ছে না?’’

নীতীশকেও বিঁধেছেন তেজস্বী। বলেছেন, ‘‘কমিশনের উচিত নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করা। ওরা কী বলতে চাইছে যে, গত বার যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা ভুয়ো ভোটার? নীতীশ কুমার ভুয়ো ভোটারদের ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন?’’

নীতীশও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তেজস্বীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনার বাবা-মা যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন আপনি অনেক ছোট। তখন পরিস্থিতি কী ছিল, আপনি জানেন? আমরা মহাজোট ছেড়েছিলাম, কারণ আপনারা ভাল কাজ করছিলেন না। আমরা অনেক কাজ করেছি মহিলাদের জন্য। আরজেডি মুসলিমদের জন্য কিছু করেনি। আমরা করেছি। আপনি এখনও শিশু। কী জানেন আপনি?’’

নীতীশের মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন আরজেডি-র বিধায়কেরা। সেই সময় এক আরজেডি বিধায়কের বলা ‘বাপ’ শব্দ নিয়ে আরও সরগরম হয়ে ওঠে বিহার বিধানসভা। তার তীব্র বিরোধিতা করেন শাসকপক্ষের বিধায়কেরা। এই পরিস্থিতিতে দুপুর ২টো পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবির ঘোষণা করেন স্পিকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement