করিমগঞ্জ পুরসভার অনাস্থা ভোটের আগে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ রুখতে কার্যত শিবির গড়ে রাখা হয়েছে দুই দলের জনপ্রতিনিধিদের। ভোটের জন্য তৈরি হয়েছে ব্যালট পেপার। পুরসভা সূত্রে খবর, পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধানের অনাস্থা ভোটের জন্য দু’রঙের ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে। ভোটগ্রহণের আগে এক জন পুরসদস্যকে ‘প্রোটেম স্পিকার’ হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। তিনিই ভোট পরিচালনা করবেন।
অসমে রাজনৈতিক পালাবদলের পর করিমগঞ্জে কংগ্রেসের ৫ পুরসদস্য বিজেপিতে যোগ দেন। ফলে পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় কংগ্রেস। বিজেপির ১৫ জন সদস্য পুরপ্রধান শিখা সূত্রধর এবং উপ-পুরপ্রধান পার্থসারথি দাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তোলেন। নিয়ম অনুযায়ী, প্রস্তাব পেশের ২০ দিনের মধ্যে আস্থাভোট করাতে হয়। তা মেনেই আগামী কাল আস্থাভোটের মুখোমুখি হবেন শিখাদেবী। পুরসভায় দলত্যাগ-বিরোধী আইন না থাকায় ‘হুইপ’ জারি করতে পারছে না দু’টি রাজনৈতিক দলই। তাই ‘ক্রস-ভোটিং’ রুখতে দু’পক্ষই শিবির গড়ে দলের পুরসদস্যদের সেখানে রেখেছে। কংগ্রেসের শিবির রয়েছে শহরের একটি হোটেলে। বিজেপির শিবির গড়েছে প্রাক্তন এক পুরসদস্যের বাড়িতে।
করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির তরফ থেকে মিশনরঞ্জন দাস এবং জেলা সভাপতি বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, বিজেপির ১৫ জন সদস্য এক জোট রয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপির পুরসদস্যদের ভোট বিভাজন করার চেষ্টা করছে কংগ্রেস। কিন্তু সেই চক্রান্ত কোনও ভাবেই বাস্তবায়িত হবে না বলে তাঁরা দাবি করেন। বিজেপির দুই নেতা নিশ্চিত, করিমগঞ্জ পুরসভা তাদের দখলে আসবেই।
কংগ্রেসও অনাস্থা ভোটে বিরোধীদের ধরাশায়ী করবে বলে দাবি করছে। করিমগঞ্জ পুরসভায় সাংসদ, বিধায়কের ভোট মিলিয়ে ভোটারের সংখ্যা ২৯। তার মধ্যে ১৫ জন বিজেপির এবং ১২ জন কংগ্রেসের। কংগ্রেস বিধায়কের একটি ভোট ছাড়া ইউডিএফ সাংসদের একটি ভোট রয়েছে। তবে সাংসদ রাধেশ্যাম বিশ্বাস অনাস্থা ভোটে উপস্থিত থাকবেন না বলে আগাম জানিয়েছিলেন।
অন্য দিকে, পিছিয়ে গেল ডিমা হাসাও জেলা বিজেপি সভাপতি নির্বাচন। ভোটের মাধ্যমেও ওই পদের নির্বাচন হবে না। প্রদেশ সমিতিই পরবর্তী জেলা সভাপতি মনোনীত করবে। আগামী কাল ওই নাম ঘোষণার কথা ছিল বিজেপি প্রদেশ সমিতির। তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, অসমে বন্যা পরিস্থিতি ও স্বাধীনতা দিবসের কথা ভেবে ওই প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা বিজেপি সভাপতি পদ নিয়ে টানপড়েন অব্যাহত। ওই পদের জন্য দৌড়ে রয়েছেন জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দীপেন থাওসেন ও বিধায়ক বীরভদ্র হাগজারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নিপোলাল হোজাই। জেলার ৮টি মণ্ডল কমিটির ১৪ জন সদস্যের মধ্যে দীপেন থাওসেনকে ৮ জন সদস্য সমর্থন দিয়েছেন বলে খবর। নিপোলাল হোজাইয়ের পাশে রয়েছেন ৫ জন। ১ জন সদস্য বর্তমান সভাপতি তথা বিধায়ক বীরভদ্র হাগজারকে সমর্থন করছেন।
জেলা সভাপতি পদের জন্য ভোট এড়াতে রাজ্য বিজেপির উপ-সভাপতি মিশনরঞ্জন দাস ও দলের জেলা রিটার্নিং অফিসার অমরেশ রায়ের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে মণ্ডল কমিটির সদস্যদের সমর্থন নেওয়া হয়। জেলা সভাপতির পদের জন্য তিন জনের নামের তালিকা রাজ্য কমিটির কাছে পাঠানো হয়।