নদীর ভাঙনে উধাও জমি। করিমগঞ্জের টুকুরগ্রামে কুশিয়ারার তীরে। ছবি: নিজস্ব চিত্র
সাত দশক পেরিয়ে গিয়েছে স্বাধীনতার। টুকরগ্রাম আছে টুকুরগ্রামেই। বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানীয় জল, চিকিৎসার সুযোগ, স্কুল, সড়ক— কিছুই কার্যত নেই সেখানে। খাতায়-কলমে কাছাড়ের অঙ্গ সেই গ্রাম। কিন্তু সব কিছুর জন্য এলাকাবাসীর ভরসা কাছের করিমগঞ্জই।
করিমগঞ্জ শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে ভাঙ্গায় কুশিয়ারার লাগায়ো হাজারখানেক একরের টুকুরগ্রাম। হাজার দেড়েক মানুষের বসবাস। আদতে সেটি কাছাড়ের কাটিগড়া বিধানসভার অন্তর্ভুক্ত। টুকরগ্রাম অনেকটা যেন ত্রিবেণী সঙ্গম। বরাক, সুরমা ও কুশিয়ারা মিলেছে সেই গ্রামের কাছেই। গ্রামের তিন দিকেই নদী। দু’দিকে বাংলাদেশ। আরও আজহ হল, গ্রামের স্থলভাগ জুড়েছে বাংলাদেশের দিকেই। সেখানে কাঁটাতার। কাছাড়ের সীমানায় থাকলেও ডাকঘর করিমগঞ্জের ভাঙ্গা। মবল ভূখণ্ডে আসতে গেলে উঠতে হয় নৌকায়। নিত্যদিনের জিনিস মেলে ভাঙ্গার বাজারে। গ্রামের পড়ুয়ারা সকলেই যায় ভাঙ্গায়। টুকরগ্রামে শুধু রয়েছে একটি পাঠশালা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বছরের বেশিরভাগ সময়ই সেখানে শিক্ষকদের দেখা মেলে না। আসেন না অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও। গ্রামের অনেকে দিনমজুরি করতে যান করিমগঞ্জ শহরে।
কুশিয়ারা নিয়েও সমস্যার শেষ নেই সেখানে। প্রতি বছরই বর্ষায় তীর ভেঙে নদীগর্ভে যায় অনেক বাড়ি, জমি। রাজনেতা, প্রশাসনের কর্তা— তখন কারও দেখা মেলে না বলে আক্ষেপ এলাকার মানুষের। তাঁদের বক্তব্য, ভোট এলেই গ্রামে ভিড় বাড়ে নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রীর। ভোট মিটতেই সবাই উধাও। তাঁরা জানান, কয়েক বছর আগে কাছাড়ের জেলাশাসক হরেন্দ্র মহন্ত এক বার টুকরগ্রামে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, ঠিকানা বদলে গ্রামের ঠাঁই যেন করিমগঞ্জেই করা হয়। কিন্তু তা এখনও পূরণ হয়নি।