প্রতীকী ছবি।
বছর চারেক আগে ভরা বাজারে বছর নয়েকের এক শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার রায়ে আজ দিল্লির এক আদালত জানিয়ে দিল, কোনও মহিলার অনুমতি ছাড়া তাঁকে স্পর্শ করা যাবে না। সেই সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাবাসের সাজা শোনাল আদালত। এমন ধরনের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে আদালত জানিয়েছে, লম্পট ও যৌন বিকৃতিসম্পন্ন পুরুষদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন মহিলারা।
ঘটনাটি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসের। উত্তর দিল্লির মুখার্জি নগরের একটি জমজমাট বাজারে একটি ন’বছরের শিশুকন্যাকে আপত্তিকর ভাবে স্পর্শ করার অভিযোগ ওঠে ছবি রাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ছবি পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে তার মা-কে বিষয়টি জানায়। তার পরে মেয়েটির মা আশপাশের লোকজনের সাহায্যে ছবিকে ধরে ফেলেন।
মামলা চলাকালীন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ছবি বারবার দাবি করতে থাকে, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। যেহেতু বাজার এলাকাটি জনবহুল, তাই বুঝতে কোথাও ভুল হয়েছে বাচ্চা মেয়েটির। সে আরও দাবি করে, আসল অপরাধী ভিড়ের সুযোগ বুঝে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ছবির এই দাবি খারিজ করে দিয়ে আদালত জানিয়েছে, অভিযুক্তের যৌন উদ্দেশ্য ছিল। ভিড়ের সুযোগটাই ব্যবহার করে সে ওই মেয়েটিকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই স্পর্শ করেছে। এর পর অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সীমা মৈনী ছবিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার হচ্ছেন ও পি রাওয়াত
রায়ে আদালত জানিয়েছে, কোনও মহিলার শরীর একদমই তাঁর নিজের। এর উপর শুধু তাঁরই অধিকার। ফলে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর দেহে হাত দেওয়ার অধিকার কারও নেই। মেয়েদের ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার অনেক পুরুষ গ্রাহ্য করেন না। আর তাই তাঁরা কোনও মহিলার দেহে হাত
দেওয়ার আগে দু’বার ভাবেন না। ভারতের মতো দ্রুত উন্নয়নশীল দেশে ছোট থেকে প্রাপ্তবয়স্ক— সব মেয়েরাই যৌন বিকৃতসম্পন্ন পুরুষদের হাতে নিগৃহীত হন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তাই শিশু নিগ্রহের ওই ঘটনায় অপরাধীকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে মেয়েটিকে। তা ছাড়াও আদালতের নির্দেশ, দিল্লি স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি ওই শিশুটিকে ৫০ হাজার টাকা দিক।