কস্তুরী মৃগ। —নিজস্ব চিত্র।
বড় একা সে।
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু বার্চ আর ঝাউয়ের ঘেরাটোপে একাকীত্বই এখন তার পাকাপোক্ত সঙ্গী।
দিন কয়েক আগে, দেশের চিড়িয়াখানা-নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ‘সেন্ট্রাল জু অথরিটি’ (সিজেডএ) স্পষ্ট করে দিয়েছে— টানা তিন বছর ধরে হন্যে হয়ে ঢুঁরেও, তার সঙ্গীর খোঁজ করাই শেষতক বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
বাকি ক’টা দিন কুফরি’র হিমাচল ন্যাচারাল পার্কে তাই নিঃসঙ্গতাই বয়ে বেড়াতে হবে দেশের এক মাত্র কস্তুরী মৃগটিকে।
সিমলা, শ্রীনগর এমনকি দার্জিলিঙের চিড়িয়াখানাতেও বছর দশেক আগে যাদের অবাধ হুটোপুটি দেখতে ভিড় করতেন দর্শকেরা, একে একে হারিয়ে গিয়েছে তারা সকলেই। দেড়-বছর আগে কুফরির চিড়িয়াখানায় তার সঙ্গিনীর মৃত্যুর পরে, ‘হিমালায়ান মাস্ক ডিয়ার’ বা কস্তুরী মৃগ প্রজাতির শেষ প্রতিনিধি এখন ওই পুরুষ হরিণটি।
হিমালয়ের কোলে পাঁচ থেকে আট হাজার ফুট উচ্চতায় আধা-বরফের ঝাউবনে ছড়িয়ে থাকা কস্তুরী মৃগদের সংখ্যাও এখন হাতে গোনা। উত্তরাখন্ড, অরুণাচল প্রদেশ আর হিমাচলের নির্দিষ্ট কিছু বনাঞ্চলে তাদের দেখা মিললেও কস্তুরী মৃগদের আদিভুমি ছিল কাশ্মীরের ডাচিংহাম অভয়ারণ্য। পরিবেশ মন্ত্রকের এক কর্তা কোনও রাখঢাক না রেখেই বলছেন, ‘‘বিধ্বস্ত কাশ্মীরে গত দশ বছরে ডাচিংহামে কোনও সুমারি করা যায়নি। সেখানে কস্তুরী মৃগের সংখ্যা কত, আদৌ তারা আছে কিনা তা বলব কি করে!’’ তবে, নেপাল, ভুটান এবং চিনের পাহাড়ে এখনও তাদের কচ্চিৎ দেখা মেলে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সিজেডএ’র এক কর্তা জানাচ্ছেন, ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন) সম্পতি ফতোয়া জারি হয়েছে— প্রাকৃতিক পরিবেশে যে ক’টি কস্তুরী মৃগ রয়েছে তাদের বন্দি করা চলবে না। ফলে বনের হরিণের চিড়ায়াখানায় প্রবেশের রাস্তাও গিয়েছে বন্ধ হয়ে।
দিন কয়েক আগে দিল্লির এক আইনজীবী তথ্য জানার অধিকার আইনে জানতে চেয়েছিলেন দেশে কস্তুরী মৃগের সংখ্যা, সিজেডএ’র তরফে তখনই জানানো হয়, কুফরির ওই কস্তুরী মৃগের কথা।
বাকিটা নিঃসঙ্গতার অপেক্ষা!