ছবি: পিটিআই।
এত দিন দলের নেতা-মন্ত্রীদের দিয়ে যা বলিয়েছেন, আজ প্রথম বার মুখ খুলে ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সেটাই বললেন অমিত শাহ। দাবি, করলেন জয় শাহ একশো ভাগ নির্দোষ। আর এ সবের মধ্যেই বিতর্ক এড়াতে অমিত-পুত্রের হয়ে আপাতত আদালতে সওয়াল না করার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। বিরোধীরা জয়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আগেই যিনি তাঁর হয়ে মামলা লড়ার জন্য কেন্দ্রের আইন মন্ত্রকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রেখেছিলেন।
গুজরাতে গিয়ে আজ এক টিভি সাক্ষাৎকারে বিজেপি সভাপতি বলেন, তাঁর ছেলে ১ টাকার সরকারি জমি নেননি। ১ টাকার ব্যবসা সরকারের সঙ্গে করেননি। ১ টাকার সরকারি বরাত নেননি। সব লেনদেন হয়েছে চেকে। সব সুদ মেটানো হয়েছে। অমিত আসলে এ কথা বলে পরোক্ষে রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগেরই তুলনা টানতে চেয়েছেন। এর পরেই সরাসরি কংগ্রেসকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘‘জয় বফর্স-কাণ্ডের মতো ঘুষ নেয়নি। হিম্মত আছে বলে ১০০ কোটি টাকার মামলা করেছে। দুর্নীতির প্রশ্নই ওঠে না। স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এত অভিযোগ ওঠার পরেও তারা মানহানির মামলা করার সাহস জুটিয়ে উঠতে পারেনি।’’ অমিতের অভিযোগ, ‘‘বিরোধীরা জয়ের ব্যবসার টার্নওভারকে বড় করে দেখাচ্ছে, আখেরে অবশ্য লোকসানই হয়েছে। জয় নিজেই তদন্তের দাবি করেছে।’’
আরও পড়ুন: প্রণবই বেশি ভাল প্রধানমন্ত্রী হতেন, বললেন মনমোহন
বিজেপি বলছে, গোটা মামলায় অমিত-পুত্রের কোনও ‘বিপদ’ নেই। অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তাই আদালতে সওয়াল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আপাতত। যদিও জয়ের আইনজীবীরা নিয়মিত মেটার সঙ্গে আলোচনা করছেন। তাঁর পরামর্শ মতোই সাজানো হয়েছে মামলা। ভবিষ্যতে জয়ের তেমন বিপদ বা অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে পরিস্থিতি বুঝে তিনি দিল্লি থেকে অমদাবাদ উড়ে যাবেন। বিজেপিরই এক নেতার কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে গুজরাতের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন মেটা। সরকারি আইনজীবী হয়েও গোধরা-কাণ্ডে অভিযুক্তদের হয়ে মামলা সাজিয়েছেন। মোদী-শাহের সঙ্গে পারিবারিক যোগাযোগও ঘনিষ্ঠ। জয়কে দেখেছেন ছোটবেলা থেকে। ফলে প্রয়োজনে তিনি নিজে আদালতে যাবেন।’’
কিন্তু অমিতের ওই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী লাগাতার বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কংগ্রেসের মতে, কেন নোট বাতিলের ঠিক আগে ফুলেফেঁপে ওঠা ব্যবসা বন্ধ করতে হলো, তার কোনও জবাব দেননি বিজেপি সভাপতি। আর তদন্ত তো করবে বিজেপি-ই, তাতেই বা কী ফল আশা করতে পারে বিরোধীরা? বেগতিক দেখে অমিত আজ ফের রবিশঙ্কর প্রসাদকে আসরে নামান। মোদী সরকারের এই আইনমন্ত্রী আজ দিল্লিতে ফের কংগ্রেস জামানার দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে পাল্টা আক্রমণ শানান।