ফাইল চিত্র।
মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডে আজ অভিযোগ গঠন করা হল মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ আদালতে। ইউএপিএ এবং অন্যান্য ধারায় সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র ও খুনের অভিযোগ আনা হল লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ শ্রীকান্ত পুরোহিত, সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে। এই চার্জ গঠন ঠেকাতে বম্বে হাইকোর্টে স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছিলেন পুরোহিত। কিন্তু গত কালই তা খারিজ হয়ে যায়। মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডের এক দশক পর এ বার নিম্ন আদালতে শুরু হবে বিচার।
পুরোহিত ও প্রজ্ঞা ছাড়া আর যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাঁরা হলেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর রমেশ উপাধ্যায়, অজয় রাহিরকর, সুধাকর দ্বিবেদী, সুধাকর চতুর্বেদী এবং সমীর কুলকার্নি।
২০১৬ সালে মালেগাঁও তদন্তের ভার হাতে পাওয়ার পরে এনআইএ প্রমাণের অভাবে সাধ্বী প্রজ্ঞা, শ্যাম সাহু, প্রবীণ তকল্কি ও শিবনারায়ণ কালসাংরাকে অভিযোগ থেকে রেহাই দিয়েছিল। অভিযোগ গঠনের ক্ষেত্রে বাকি তিন জন ছাড় পেলেও, পেলেন না সাধ্বী। আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘গোটাটাই ছিল কংগ্রেসের ষড়যন্ত্র। আমি নিশ্চিত, নির্দোষ প্রমাণিত হব। শেষ পর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়।’’
অভিযোগ গঠনের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করতে রাজি না হলেও বম্বে হাইকোর্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল পুরোহিতের আর্জিটি আগামী মাসে শুনবে। ইউএপিএ-তে আনা অভিযোগ থেকে তাঁকে রেহাই দেওয়া হবে কি না, তখনই সিদ্ধান্ত হবে এ বিষয়ে। বিচারপতি এস এস শিন্ডে এবং এ এস গডকড়ীর ডিভিশন বেঞ্চ পুরোহিতের আবেদনের জবাবে এনআইএ-কে তাদের বক্তব্য জানাতে বলেছে। এনআইএ-র আইনজীবী সন্দেশ পাটিলকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে তা আদালতে জমা দিতে হবে।
মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে একটি মসজিদের অদূরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছিল ২০০৮ সালে। বোমা বেঁধে রাখা ছিল মোটর সাইকেলে। বিস্ফোরণের পিছনে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের হাত রয়েছে বলে দাবি করে মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা। মোটর সাইকেলটি প্রজ্ঞার বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। নাম জড়ায় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন কর্মীদেরও। লেফটেন্যান্ট কর্নেল পুরোহিত ও সমীর কুলকার্নিকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
গত এক দশকে বহু চাপানউতোর হয়েছে এই বিস্ফোরণ নিয়ে। চর্চায় উঠে এসেছে নতুন শব্দবন্ধ ‘গৈরিক সন্ত্রাস’। গেরুয়া শিবির বরাবর বলে এসেছে, এটা কংগ্রেসের কল্পনা। পুরোহিতও দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। আজ এনআইএ-র বিশেষ আদালতে সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করতে গিয়ে বিচারক বলেছেন, ‘‘অভিনব ভারত নামে সংগঠন গড়া হয়েছিল সন্ত্রাস ছড়ানোর উদ্দেশ্যে। মালেগাঁওয়ে একটি মোটরসাইকেলে বোমা বেঁধে রাখা হয়। ওই বোমায় ছিল আরডিএক্স। যা ফেটে ৬ জন মারা যান ও ১০১ জন আহত হন। অভিযোগ, এই ঘটনা ঘটানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছিলেন এই সাত জন। শুনানি হবে ২ নভেম্বর।’’