‘ঋণ মকুবে লাভ নেই’, সুরাহার পথ অজানাই

কৃষিঋণ মকুব করে কোনও লাভ হবে না। বরং কংগ্রেস যে ভাবে কয়েকটি রাজ্যে কৃষিঋণ মকুব করেছে বা করার কথা বলছে, তা নেহাত চমক বলেই মনে করেন বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৪
Share:

কৃষিঋণ মকুব করে কোনও লাভ হবে না। বরং কংগ্রেস যে ভাবে কয়েকটি রাজ্যে কৃষিঋণ মকুব করেছে বা করার কথা বলছে, তা নেহাত চমক বলেই মনে করেন বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তিন মাস পরে লোকসভা ভোটের আগে চাষিদের মন জিততে ঠিক কী করা উচিত, সেটাই এখনও পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপির হারের পরে প্রথম সাক্ষাৎকারে কৃষিঋণ নিয়ে উল্টে কংগ্রেসকেই আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘‘ভোটের দিকে তাকিয়ে ঋণ মাফ করলে কি চাষিদের লাভ হয়? ২০০৯-এর ভোটের আগেও ঋণ মাফ করা হয়েছিল। তাতে লাভ হয়েছে?’’ চাষি কেন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন, সেটাই এখন প্রশ্ন মোদীর কাছে। তার সমাধানের পথ না জানলেও মোদীর কথায়, ‘‘আমি এমন একটা পরিস্থিতি চাই, যেখানে চাষিরা ঋণের বোঝায় চাপা পড়বেন না।’’ কিন্তু কী ভাবে? সেটা বলেননি মোদী। ফলে গোটা দেশে চাষিদের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মুখে মোদী তথা বিজেপি কী নিয়ে ভোটে যাবেন, তা

এখনও অস্পষ্ট।

Advertisement

রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস কৃষিঋণ মকুব করে তিন রাজ্যের ভোটে বিজেপিকে হারিয়েছে। এখন মোদী সরকারও কৃষিঋণ মকুবের পথে হাঁটলে লোকে বলবে, চাপের মুখে রাহুলের দেখানো পথেই হাঁটছেন মোদী। তাই সে পথে হাঁটতে

নারাজ মোদী।

মোদী মুখে কৃষিঋণ মকুব নিয়ে যা-ই বলুন, তাঁর দলের সরকারই কিন্তু উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে কৃষিঋণ মকুব করেছে। তিন রাজ্যে হারের পরে মোদীর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেই দিয়েছেন, দেশের সব চাষির ঋণ মকুব করার মতো অর্থ সরকারি কোষাগারে নেই। তাই ইচ্ছে থাকলেও খয়রাতির প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারছেন না মোদী-জেটলিরা।

চাষিরা যাতে ঋণের কবলে না পড়েন, সে জন্য গত সাড়ে চার বছরে নানা চেষ্টা হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ২২টি ফসলে খরচের দেড়গুণ দাম ঘোষণা হয়েছে। বীজ, সারের দাম নিয়ন্ত্রণে রেখে চাষের খরচ কমানোর চেষ্টা হয়েছে। বিকল্প ফসলের চাষ, ডালের চাষ বাড়ানোর দিশা দেখানো হয়েছে। সে জন্যই ২০১৮-য় রেকর্ড পরিমাণ ফসল উৎপাদন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী এই দাবি করলেও বাস্তব হল, মোদী জমানায় কৃষকদের দুরবস্থা চরমে উঠেছে। ঋণের বোঝা বইতে না পেরে কৃষকের আত্মহত্যা, ফসলের দাম না পাওয়ার হতাশা ক্রমশ বেড়েছে। সেটাই ক্ষোভের আকার নিয়েছে রাজ্যে রাজ্যে। বিজেপি নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় তা মেনেও নিয়েছেন।

কিন্তু মোদীর কথায়, ‘‘চাষিদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আসলে সব চাষির ঋণ মকুব হচ্ছে না। সরকারি নির্দেশিকা দেখলেই তা বোঝা যাবে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘চাষিদের

সামান্য অংশই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন। সিংহভাগ মহাজনদের থেকে ঋণ নেন। সরকার ঋণ মাফের ঘোষণা করলে যে চাষিরা মারা পড়ছেন, তাঁরা ওই প্রকল্পের আওতার বাইরেই থেকে যাবেন।’’ কৃষকদের দুরবস্থা ঘোচাতে তা হলে বিকল্প কী? সেটাই জানা

নেই মোদীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন