মন্ত্রীর সামনে দলিত-বার্তা বিচারপতির

আজ দিল্লিতে সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘আমাদের সংবিধান আসলে প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর। সংখ্যাগুরু বিচক্ষণতার স্বর। এই সংবিধানই আমাদের সঙ্কট ও অনিশ্চয়তায় পথ দেখিয়েছে। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের সংবিধানের উপদেশ মেনে চলা উচিত। যদি তা না করি, আমাদের দম্ভ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।— ফাইল চিত্র।

সংবিধানের দেখিয়ে দেওয়া পথে না-চললে তার মূল্য দিতে হবে বলে সতর্ক করলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। আজ দিল্লিতে সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠানে বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘আমাদের সংবিধান আসলে প্রান্তিক মানুষের কণ্ঠস্বর। সংখ্যাগুরু বিচক্ষণতার স্বর। এই সংবিধানই আমাদের সঙ্কট ও অনিশ্চয়তায় পথ দেখিয়েছে। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের সংবিধানের উপদেশ মেনে চলা উচিত। যদি তা না করি, আমাদের দম্ভ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।’’

Advertisement

দলিত-সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলার প্রতিবাদে আজ কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিও সংবিধান দিবসকে প্রতিবাদের হাতিয়ার করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সামনে প্রধান বিচারপতির কথাতেও প্রান্তিক মানুষের অধিকারের উল্লেখ তাৎপর্যপূর্ণ।

সম্প্রতি একাধিক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট তথা বিচার বিভাগ সাংবিধানিক নৈতিকতার কথা স্মরণ করিয়েছে। যার অর্থ হল, সংবিধানে নিহিত মূল সুরের প্রতি আনুগত্য। ব্যক্তি ও সমাজের উন্নয়নের স্বার্থে, সকলকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা। বিচার বিভাগ যখন সরকারকে সাংবিধানিক নৈতিকতার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, তখন পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন আইনমন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, ‘‘সাংবিধানিক নৈতিকতার স্পষ্ট সংজ্ঞা থাকা দরকার।’’ এক এক জন বিচারপতির কাছে তার এক এক রকম অর্থ হওয়াটা কোনও কাজের কথা নয় বলে মন্ত্রী মন্তব্য করেন। বলেন, সরকারের কাজে বিচার বিভাগ কতটা হস্তক্ষেপ করতে পারে, তারও একটা সীমা থাকা উচিত।

Advertisement

সংবিধান পরিষদে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল ১৯৪৯-এর ২৬ নভেম্বর। তাই এই দিনটি সংবিধান দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আজ কংগ্রেসের তফসিলি জাতি শাখার উদ্যোগে দলিতদের উপর হামলার প্রতিবাদ এবং সংবিধানে দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশ জুড়ে প্রচার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শরদ যাদব, ডি রাজার মতো অন্য দলের নেতারাও সেখানে হাজির ছিলেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, দলিত-সংখ্যালঘুর সাংবিধানিক অধিকার ছিনিয়ে নিতেই সঙ্ঘ পরিবার সংবিধান বদলের কথা বলছে। এই অভিযোগ তুলে নাম না করে আজ মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি বলেন, ‘‘সংবিধান মুছে দেওয়ার চক্রান্ত যারা করছে, কংগ্রেস তাদের সফল হতে দেবে না।’’

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা অবশ্য আজ নিজেরাই মেনে নিয়েছেন, গরিব, প্রান্তিক, মহিলাদের কাছে তাঁরা ন্যায় পৌঁছে দিতে পারছেন না। সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে বিচারপতি এ কে সিক্রি এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করায়, অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেন, আইনজীবীদের চড়া ফি-ও গরিবদের আইনি সাহায্যের পথে বাধা। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিকাশ সিংহ এ জন্য আবার বিচারপতি নিয়োগে গাফিলতিকে দায়ী করেছেন। তাঁর মতে, কলেজিয়াম যোগ্য প্রার্থী বাছাই করলেও সেরা প্রার্থীদের বাছাই করতে পারছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন