দুরন্ত এখন বেজায় শান্ত! দেরি সাড়ে সাত ঘণ্টা

কোনও দিন ঠিক সময়ে যদি বা ছাড়ছে, মাঝপথে দাঁড়িয়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেমন সোমবার নয়াদিল্লি থেকে ছাড়া দুরন্ত এক্সপ্রেস মঙ্গলবারেও শিয়ালদহে পৌঁছেছে সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৩
Share:

ফাইল চিত্র।

অজস্র মেল ও এক্সপ্রেস থাকা সত্ত্বেও দুরন্ত চালু করা হয়েছিল অতি দ্রুত সফরের জন্য। কিন্তু ভুক্তভোগী যাত্রীদের পরামর্শ, কাজের জন্য দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনোর ইচ্ছে থাকলে কোনও মতেই শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেসে চড়বেন না। বিশ্রামের জন্য অবশ্য তাতে চড়তে বাধা নেই।

Advertisement

কেন এমন পরামর্শ? কেননা দিনের পর দিন দুরন্ত-সফরে সময় নষ্ট করে যাত্রীরা তিতিবিরক্ত। কোনও দিন শুরুতেই ট্রেন ছাড়ছে ৪-৫ ঘণ্টা দেরি করে। কোনও দিন ঠিক সময়ে যদি বা ছাড়ছে, মাঝপথে দাঁড়িয়ে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেমন সোমবার নয়াদিল্লি থেকে ছাড়া দুরন্ত এক্সপ্রেস মঙ্গলবারেও শিয়ালদহে পৌঁছেছে সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরিতে।

যাত্রীরা জানাচ্ছেন, সোমবার রাতে নয়াদিল্লি থেকে দুরন্ত ছেড়েছিল প্রায় ঠিক সময়েই। কিন্তু রাত বাড়তেই শুরু হয় থমকানোর পালা। সকাল হতে না-হতেই দেরি করে ফেলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। তার পরে যত বেলা বেড়েছে, ততই হয়েছে দেরি। শেষে আট ঘণ্টারও বেশি দেরিতে পৌঁছয় ট্রেনটি।

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১০-এ শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেস চালু করেন। কিন্তু গত এক বছর ধরে এই ট্রেন গড়ে দেরি করছে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। অথচ ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’-এর নাম করে টিকিটের দাম বাড়ানোয় যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বিরাট অঙ্ক।

শুধু দুরন্ত নয়। রাজধানী থেকে শতাব্দী— সারা দেশে বেশির ভাগ এক্সপ্রেস ট্রেনই দেরিতে চলছে। কেন? রেল-কর্তৃপক্ষের জবাব, পুরনো লাইন ও সিগন্যাল পাল্টানোর কাজ চলছে। তাই দেরি। যাত্রীদের দাবি, রেল ঘোষণা করুক, কত দিন পরিকাঠামো পরিবর্তনের কাজ চলবে। আর ট্রেন সময়ে চালাতে না-পারলে ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ নেওয়া বন্ধ হোক।

রেল সূত্রের খবর, পরিকাঠামোর কাজ চলছে মূলত মোগলসরাই থেকে ইলাহাবাদ হয়ে দিল্লি পর্যন্ত। এমনিতেই ওই লাইনে ট্রেনের চাপ খুব বেশি। তার উপরে ট্রেন আটকে কাজ চালানোয় তৈরি হচ্ছে ট্রেনের জট। বেড়ে চলেছে দেরির পাল্লা। আগামী ছ’মাসেও ওই কাজ শেষ করা যাবে না বলে রেল সূত্রের খবর।

একই অবস্থা চলছে এখন উত্তর-পূর্বেও। বন্যায় এ বছর উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে প্রায় দু’মাস ট্রেন বন্ধ ছিল। তার পরে ফের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে অনেক দিন। কিন্তু বেশির ভাগ ট্রেন নিত্যদিনই চলছে ৪-৫ ঘণ্টা দেরি করে। কিন্তু কেন এই দেরি, রেলকর্তারা তার সন্তোষজনক কারণ জানাতে পারছেন না। পরস্পরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় এড়াচ্ছেন।

পরিকাঠামোর দুরবস্থা সত্ত্বেও মধ্যে নতুন টাইম টেবিলে ৪৮টি ট্রেনের গতি বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে রেল। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রেলের অন্দরেই। রেলকর্তাদের একাংশের প্রশ্ন, দেশ জুড়ে ট্রেনগুলি যেখানে হোঁচট খেতে খেতে চলছে, সেখানে নতুন করে ট্রেনের গতি বাড়ানোর কথা ঘোষণা কারণ কী? এটা কি সুপারফাস্টের তকমা লাগিয়ে আয় বাড়ানোর চেষ্টা?

জবাব দেওয়ার কেউ নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন