পরিত্যক্ত রেলপথই এখন এলাকার মানুষের ‘পথ’

লামডিং-শিলচর মিটারগেজ রেললাইন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডিমা হাসাও জেলার প্রায় একশোটি গ্রামের মানুষ কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।মাহুর থেকে ডিটেকছড়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে সদর শহর হাফলঙের কিংবা বাইরের পৃথিবীর যোগাযোগ বলতে ছিল ওই মিটারগেজ ট্রেন।

Advertisement

বিপ্লব দেব

হাফলং শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

লামডিং-শিলচর মিটারগেজ রেললাইন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডিমা হাসাও জেলার প্রায় একশোটি গ্রামের মানুষ কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।

Advertisement

মাহুর থেকে ডিটেকছড়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে সদর শহর হাফলঙের কিংবা বাইরের পৃথিবীর যোগাযোগ বলতে ছিল ওই মিটারগেজ ট্রেন। সেই লাইন বন্ধ হয়ে ব্রডগেজ লাইন সরে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন এই এলাকার মানুষ। কারণ এই এলাকা থেকে সড়ক পথে হাফলঙের কোনও যোগাযোগই নেই।

এই পরিস্থিতিতে মানুষ এখন পরিত্যক্ত মিটার গেজ লাইনের পথটিকেই রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছেন। রেল কোম্পানি লোহার রেল তুলে নিয়ে গিয়েছে। তুলে নিয়ে গিয়েছে স্লিপারগুলিও। বাঁধের মতো নিঃশব্দে পড়ে রয়েছে রেলের পরিত্যক্ত সেই পথ। গ্রামের মানুষই উদ্যোগী হয়ে সেই পথকেই ব্যবহার করতে শুরু করেছে। মোটরবাইক আরোহীরা সেই খোয়া ছড়ানো ‘পথ’-এই সওয়ারি হয়ে পৌঁছচ্ছেন হাফলঙে। এলাকার উৎসাহী কিছু বেকার তরুণ সেই পথেই নামিয়ে ফেলেছে অটোরিকশা। দুর্ঘটনার ভয় পেলে তো নিরুপায় মানুষের চলবে না। তাই তাঁরা আরোহী হচ্ছেন সেই অটোরিকশাতেই। মাহুর-মাইগ্রেনডিসা ও হাফলং হিল-জাটিঙ্গার মধ্যে অটোরিকশা চলাচল করছে। এখনও জেলা প্রশাসন বা উত্তর কাছাড় পার্বত্য পরিষদ এ ব্যাপারে উদাসীন। স্থানীয় মানুষের দাবি, এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন পরিত্যক্ত মিটারগেজের এই পথকেই মেরামত করে রাস্তা তৈরি করে দিক। তাহলেও তাঁদের সমস্যা কিছুটা মিটবে।

Advertisement

জাদিখে নাইশ হসম ও স্থানীয় অন্য সংগঠনগুলি প্রাচীন লামডিং-শিলচর মিটারগেজ লাইনের মাহুর থেকে ডিটেকছড়া পর্যন্ত অংশকে ‘হেরিটেজ লাইন’ হিসেবে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে। কিন্তু রেল এই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। নাইশ হসমের প্রধান কল্যাণ দাওলাগাপুর বক্তব্য ছিল, এই অংশটিকে রেখে দিলে বিস্তীর্ণ এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হত না। আপাতত সে আশা ছেড়ে তাঁরাও পরিত্যক্ত মিটারগেজ রেল পথে রাস্তা নির্মাণের দাবি তুলেছেন। এই নতুন প্রস্তাবটি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন