অসমের খসড়া নাগরিক পঞ্জিতে (এনআরসি) বিহারের প্রায় ৭৪ হাজার মূল নিবাসীর নাম ওঠেনি। নাম তোলার জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁরা। মাস পাঁচেক আগে অসম থেকে সেই নথি যাচাইয়ের জন্য বিহার সরকারের কাছে পাঠানো হলেও রাজ্যের তরফে প্রথমে তাতে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি গোটা বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে হইচই শুরু হওয়ায় তৎপরতা বেড়েছে প্রশাসনের। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নির্দেশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরকে ‘নোডাল এজেন্সি’ করে শুরু হয়েছে তথ্য যাচাই। দফতরের প্রধান সচিব ব্রজেশ মেহরোত্রা প্রত্যেক জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের চিঠি পাঠিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে নথি যাচাই করে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
কাজের সূত্রে অসমে গিয়ে বসবাস করছেন বিহারের বহু মানুষ। সূত্রের খবর, পাঠানো নথির মধ্যে ১০ হাজার যাচাই করে পাঠানো হয়েছে। তবে বাকি ৬৪ হাজারের মধ্যে ১২ হাজার বাসিন্দার প্রমাণপত্র পড়তেই সমস্যা হচ্ছে। তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছে রাজ্য। এ ছাড়া বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির কাছেও পাঠানো হয়েছে ৪৮০০ আবেদনের কপি।
চলতি সপ্তাহেই জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রজেশবাবু। তিনি আজ বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে অসম সরকারের তরফে ৫৭ হাজার প্রমাণপত্র যাচাই করার জন্য পাঠিয়েছিল। দিন কয়েক আগে আরও ১৭ হাজার নথি ও প্রমাণপত্র পাঠিয়েছে। সমস্ত কাগজপত্র নির্দিষ্ট জেলাশাসকদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শেষ করে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’
মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে ব্রজেশ মেহরোত্রা চিঠি লিখেছেন বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির চেয়ারম্যান আনন্দ কিশোরকে। চিঠি পাওয়ার পরে আনন্দ কিশোর বলেন, ‘‘৪৮০০টি নথির মধ্যে প্রায় এক হাজার নথি ইতিমধ্যেই যাচাই করা হয়েছে। বাকি নথি যাচাইয়ের কাজ আগামী দশ দিনের মধ্যে শেষ করা হবে।’’
সাড়ে সাত হাজার নথি পাঠানো হয়েছে সারণ জেলায়। জেলাশাসক সুব্রত সেন বলেন, ‘‘আমার কাছে আসা নথির মধ্যে প্রায় ৭৫০টি অন্য জেলার ছিল। তা আমরা সেখানেই পাঠিয়েছি। বাকি নথি দশ দিনের মধ্যে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পরীক্ষা করে রিপোর্ট পাঠাব।’’ তিনি জানান, অনেক পুরনো এবং অপাঠ্য নথি থাকায় যাচাইয়ে একটু অসুবিধা হচ্ছে।