শপথ মিটলেও প্রশ্ন, খট্টর-রাজ টিকবে তো

বিজেপি সূত্র বলছে, জেজেপি নেতৃত্ব ও নির্দলদের দাবির সামনে এখন নাজেহাল অবস্থা খট্টরের। বিতর্কিত বিধায়ক গোপাল কান্ডাকে বাদ দিলেও বাকি নির্দল বিধায়কেরাও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক চাইছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

পাশাপাশি: মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরে মনোহরলাল খট্টর। পাশে নয়া উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা। রবিবার চণ্ডীগড়ে। পিটিআই

দীপাবলির দিন শপথ গ্রহণ শুভ না অশুভ?

Advertisement

গেরুয়া শিবিরে ব্যাপারটা নিয়ে দ্বিমত আছে। তবু তাড়াহুড়ো করে আজই হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে হল মনোহরলাল খট্টরকে। সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নতুন সঙ্গী জননায়ক জনতা পার্টির (জেজেপি)-র দুষ্মন্ত চৌটালাও। কথা ছিল, আরও জনা চারেক মন্ত্রীর শপথ হবে। কিন্তু জট সেখানেও কাটেনি। অগত্যা! আপাতত দু’জন শপথের পরে বাকি পর্ব পিছিয়ে দেওয়া হল।

হরিয়ানার মতো রাজ্যে বিজেপি আবার ক্ষমতায় এল, কিন্তু শপথে হাজির হলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিংবা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। কাযনির্বাহী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা অবশ্য ছিলেন। কিন্তু বড় মাপের কোনও নেতা-মন্ত্রী ছিলেন না। তবে যে অকালি নেতা প্রকাশ সিংহ বাদলের মাধ্যমে জেজেপি নেতা দুষ্মন্ত চৌটালাকে বিজেপিমুখী করা হয়েছিল, প্রবীণ সেই নেতা উপস্থিত ছিলেন শপথ মঞ্চে। আর ছিলেন সদ্য তিহাড় জেল থেকে ‘ছুটি’ পাওয়া দুষ্মন্তের বাবা, দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত অজয় চৌটালা।

Advertisement

হাত থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ফস্কে যাওয়া কংগ্রেসের ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা বললেন, ‘‘এ সরকার তো বেশি দিন চলবে না। নিজেদের মধ্যেই বিরোধে ভরা। স্বার্থের জোটে ভোটের অপমান হয়েছে। মানুষ ভোট দিয়েছে এক ভাবে, জোট হয়েছে উল্টো পথে।’’ এ কথা বলে ফের পরোক্ষে রাহুল গাঁধীকে একহাত নিলেন হুডা। যে রাহুল গাঁধী এখনও পর্যন্ত হরিয়ানা-মহারাষ্ট্রের ফলের জন্য দলের কর্মীদের অভিনন্দন জানাননি। প্রত্যাশার তুলনায় ভাল ফল সত্ত্বেও। আজ রাহুল টুইট করেছেন। কিন্তু দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাতে।

হুডা আজ বলেন, ‘‘সংগঠনে বদল আনার জন্য খুব কম সময় পেয়েছি। আরও আগে সময় পেলে ফল অন্য রকম হত।’’ কংগ্রেস সূত্র বলছে, হরিয়ানায় অন্তত ১২টি আসনে জেজেপি হারিয়েছে কংগ্রেসকে। আরও তিন আসন দল হেরেছে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেসিদের জন্য।

কিন্তু হরিয়ানায় এ বারে ভোট হয়েছে মূলত বিজেপির বিরুদ্ধে। তার পরেও সঙ্গী জুটিয়ে সরকার গড়ল তারা। প্রশ্ন উঠছে, সরকার গড়তে কেন এত তাড়াহুড়ো করল বিজেপি? মহারাষ্ট্রে যেমন কোনও তাড়াই দেখাচ্ছে না তারা। আর শুধু দু’জনই বা কেন শপথ নিলেন?

বিজেপি সূত্র বলছে, জেজেপি নেতৃত্ব ও নির্দলদের দাবির সামনে এখন নাজেহাল অবস্থা খট্টরের। বিতর্কিত বিধায়ক গোপাল কান্ডাকে বাদ দিলেও বাকি নির্দল বিধায়কেরাও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক চাইছেন। তার উপর রয়েছে জেজেপির দাবি। সে সব জট কাটিয়েই সমাধান হবে। যদিও আজ শপথের পরে বিজেপি-জেজেপি নেতারা বলেন, সরকার পুরো পাঁচ বছর স্থায়ী হবে। আর তিহাড় থেকে বেরনো অজয় চৌটালার বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস যা-ই বলুক, সরকার স্থায়ী হবে। সন্তানের সাফল্যের থেকে গর্ব এক জন বাবার কাছে আর কী হতে পারে? এর থেকে ভালো দীপাবলি হতে পারত না।’’ নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্তও বলেন, ‘‘হরিয়ানায় নতুন যুগের সূচনা হল।’’

অমিত শাহ যখনই দুষ্মন্তকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন থেকে মুখ ভার খট্টরের। আজ শপথ নিয়েও খুব বেশি হাসি ফুটল না। তাতেই প্রশ্ন— সংসার টিকবে তো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন