গত সপ্তাহে রাজ্যসভায় নিয়মিত হাজির থাকতে বিজেপি সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আজ রাজ্যসভাতেই শাসক শিবিরের অধিকাংশ সাংসদের অনুপস্থিতিতে ওবিসি কমিশন বিলে সংশোধনী পাশ করিয়ে নিলেন বিরোধীরা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী। রাতে শীর্ষ মন্ত্রীদের বৈঠকে তিনি জানতে চান, অধিকাংশ বিজেপি সাংসদ ছিলেন না কেন? আগামিকাল সাংসদদেরও এই প্রশ্ন করবেন তিনি।
সাংবিধানিক মর্যাদা দিয়ে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) কমিশন গড়তে বিল এনেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে মোটের উপরে বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন সব সদস্যই। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে আপত্তি ছিল বিরোধীদের। আজ সন্ধ্যায় রাজ্যসভায় বিল পাশের সময়ে বিজেপির অধিকাংশ সাংসদই হাজির ছিলেন না। তখন কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ একটি সংশোধনের প্রস্তাব দেন। সেটি পাশও হয়ে যায়। সংশোধিত বিল অনুযায়ী, ওবিসি কমিশনের সব সদস্যই হবেন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ। সংবিধান সংশোধনী পাশের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন। রাজ্যসভায় এমনিতেই বিরোধীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তার উপরে বিজেপির সাংসদেরা অনেকেই হাজির না থাকায় সংশোধনী পাশ করানোয় আরও সুবিধে হয়। রাজ্যসভায় বিজেপির নেতা ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সংশোধনী আটকাতে কার্যত কাকুতি মিনতি করেন। জানান, কমিশনের সব সদস্য ওবিসি শ্রেণিভুক্ত হওয়া বৈধ নয়। এই সংশোধনী আদালতে খারিজ হয়ে যাবে। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি।
এক শীর্ষ মন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘বৃষ্টির জন্য অনেক বিজেপি সাংসদের রাজ্যসভায় যেতে দেরি হয়েছিল। রাজ্যসভায় আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে কংগ্রেসের সাহায্য ছাড়া বিল পাশ করানো অসম্ভব।’’ এই বিল নিয়ে আলোচনার সময়ে কংগ্রেস হুইপ জারি করে সব সদস্যের হাজিরা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু বিজেপি হুইপ জারি করেনি। ফলে বৃষ্টি বা সংখ্যাগরিষ্ঠতার যুক্তিতে অসন্তুষ্ট মোদী। রাজনীতিকদের মতে, গুজরাতে দল ভাঙা নিয়ে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করছেন অনেকে। কিন্তু এই বিল সংশোধন করে সরকারের মুখে এক দফা ঝামা ঘষে দিয়েছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, ‘‘সংশোধনীতে বলা হয়েছে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে থেকেই ওবিসি কমিশনের মহিলা ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি খুঁজে নিতে হবে। আরও বলা হয়েছে রাজ্য ওবিসি কমিশনের সুপারিশ কেন্দ্রীয় ওবিসি কমিশন মানতে বাধ্য থাকবে। আপনাদের কি মনে হয় এই সংশোধনীগুলিতে ওবিসি শ্রেণির ক্ষতি হবে?’’