জোড়-বিজোড় নীতি ফিরছে রাজধানীতে

কেজরীবালের কথায়, ‘‘ওই নীতি অতীতে যখন প্রযোজ্য হয়েছিল, তখন ১০-১৩ শতাংশ বায়ুদূষণ কমে যায়। তাই জোড়-বিজোড় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫০
Share:

ধোঁয়াশায় ঢেকেছে দিল্লির রাস্তা। —ফাইল চিত্র

বায়ুদূষণ কমাতে ফের দিল্লির রাস্তায় ফিরছে জোড়-বিজোড় পরিবহণ নীতি।

Advertisement

২০১৬ সালে দিল্লিতে বায়ুদূষণ প্রবল ভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রথম বার জোড়-বিজোড় নীতি হাতে নিয়েছিল কেজরীবাল সরকার। সাধারণত শীতের শুরুতে বায়ুদূষণের শিকার হয় গোটা রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকা। এ বার তাই আগেভাগেই দূষণ কমাতে সাত দফা নীতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। যার অন্যতম হল এই জোড়-বিজোড় নীতি। আজ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল জানান, ‘‘আগামী ৪ থেকে ১৫ নভেম্বর ওই নীতি মেনে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেরোতে হবে দিল্লিবাসীকে। জোড় সংখ্যার দিনে বেরোবে জোড় নম্বরের গাড়ি আর বিজোড় সংখ্যার দিনে বিজোড়।’’ কোনও গাড়ি জোড় না বিজোড়, তা ঠিক হবে গাড়ির শেষ সংখ্যার উপরে। তবে শনি-রবিবার ওই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। ছাড় দেওয়া হয়েছে মহিলাচালিত গাড়ি, দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্সের মতো আপৎকালীন গাড়ি, সিএনজি গাড়ি ও স্কুলবাসকে। কেজরীবালের কথায়, ‘‘ওই নীতি অতীতে যখন প্রযোজ্য হয়েছিল, তখন ১০-১৩ শতাংশ বায়ুদূষণ কমে যায়। তাই জোড়-বিজোড় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, শীতের শুরুতে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে আসা হাওয়ার গতি কমলেই দূষণ সমস্যা তৈরি হয় দিল্লিতে। কারণ ওই সময়ে পঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের খেতে নাড়া পোড়ানো থেকে উৎপন্ন দূষিত বায়ু দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার আকাশকে চাদরের মতো ঢেকে রাখে। হাওয়ার গতি না-থাকায় দূষণের চাদর এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকে। ওই আবহে গাড়ি ও দিওয়ালির বাজি দূষণ পরিস্থিতি আরও অসহনীয় করে তোলে। অন্যান্য বার দূষণে আকাশ ঢাকা পড়ার পরে সরকার নড়ে চড়ে বসে। এ বার অন্তত দু’মাস আগে দিল্লি সরকারের সক্রিয় হওয়াকে ইতিবাচক পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন পরিবেশবিদরা। কেজরীবালের দাবি, ‘‘ধারাবাহিক একাধিক পদক্ষেপের ফলে দিল্লির বাতাসে গত বছরের এই সময়ের চেয়ে অন্তত ২৫ শতাংশ দূষণ কম। দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই আগে থেকেই সাবধান হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’’ তবে কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর দাবি, দিল্লির বাইরে রিং রোড তৈরি করেছে কেন্দ্র। ফলে চারপাশের কারখানার বিশালাকার যানগুলিকে দিল্লিতে ঢুকতে হয় না। এর ফলে দিল্লিতে দূষণ বেশ কিছুটা কমেছে। তাই জোড়-বিজোড় নীতির প্রয়োজন নেই।

Advertisement

বায়ুদূষণের মোকাবিলায় যে সাত দফা পদক্ষেপ করা হয়েছে তার মধ্যে জোড়-বিজোড় নীতি ছাড়াও ঠিক হয়েছে, খেতে ফসল কেটে ফেলার পরে পড়ে থাকা অংশ বা নাড়া যাতে কৃষকেরা না-পোড়ান তাই নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপরে। এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলির সঙ্গেও। মধ্যস্থতায় কেন্দ্র। দূষণ নিয়ন্ত্রণে দিওয়ালিতে বাজি না-পোড়ানোর আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন