চেকপোস্টের জমি তালাশ শিকারপুরে

কাঁটাতারের বেড়ার দু’পারে একই ভাষা ও সংস্কৃতির দুই দেশ। ভারত আর বাংলাদেশকে ভাগ করেছে এক চিলতে মাথাভাঙা নদী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

করিমপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০২:৫৪
Share:

সরেজমিন: নিউ শিকারপুরে। নিজস্ব চিত্র

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চেকপোস্ট তৈরিতে জমি চিহ্নিত করার জন্য নিউ শিকারপুর পরিদর্শন করে গেল প্রশাসনিক দল। তাতে আশার আলো দেখছেন সীমান্তের মানুষ। খুশি বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরাও।

Advertisement

কাঁটাতারের বেড়ার দু’পারে একই ভাষা ও সংস্কৃতির দুই দেশ। ভারত আর বাংলাদেশকে ভাগ করেছে এক চিলতে মাথাভাঙা নদী। উভয় দেশের আইন মেনে এখানে দু’দেশের মধ্যে একটি চেকপোস্ট বা স্থলবন্দর তৈরির দাবি দীর্ঘদিনের। সেই দাবি নিয়ে গত বছরের নভেম্বরের গোড়ায় এ দেশে আসে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া থেকে তেরো সদস্যের জনপ্রতিনিধি দল। চেকপোস্ট তৈরির জন্য সরকারের কাছে তাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন।

শুক্রবার তেহট্টের মহকুমাশাসক সুধীর কোন্তম, করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র, বিডিও এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরা নিউ শিকারপুরে জমি দেখতে যান। মহকুমাশাসক জানান, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের আবেদন অনুযায়ী রাজ্য শিল্প ও বাণিজ্য দফতর নদিয়া জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে প্রস্তাবিত এলাকার জমি ও ভৈগোলিক অবস্থান নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছিল। সেই মতো নিউ শিকারপুরে জমি ও রাস্তার পরিকাঠামো চিহ্নিত করতে প্রাথমিক ভাবে জমি পরিদর্শন করা হল। বিস্তারিত রিপোর্ট জেলা প্রশাসনকে জানানো হবে।

Advertisement

উত্তরে হিলি ও দক্ষিণে বনগাঁ সীমান্তে চেকপোস্ট রয়েছে। মাঝখানে চারশো কিলোমিটারের বিস্তারে আর কোনও চেকপোস্ট নেই। পারাপারের সোজা পথ না থাকায় কাঁটাতারের ফাঁক গলে পাচারের রমরমা।

২০০৪ সাল থেকেই চেকপোস্টের দাবি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠিচাপাটি পাঠিয়ে এসেছেন করিমপুর উদ্যান ও কৃষিকল্যাণ সমিতির সম্পাদক বিশ্বনাথ বিশ্বাস। তাঁর মতে, বাংলাদেশের প্রাগপুর ও ভারতের শিকারপুরের মাঝে সীমান্তে চেকপোস্ট হলে দুই এলাকারই আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো বদলে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়বে। পড়শি দেশে ছড়িয়ে আছেন অনেকেরই আত্মীয়-পরিজন। বহু পথ উজিয়ে তাদের পেট্রোপোল বা হিলি সীমান্ত হয়ে যাতায়াত করতে হয়। চেকপোস্ট হলে তাঁদেরও সুবিধে।

কুষ্টিয়া জেলার আওয়ামি লীগের সাংসদ আলহাজ রেজাউল হক চৌধুরী বলেন, “নিউ শিকারপুর ও প্রাগপুরের মধ্যে দূরত্ব মাত্র দু’শো মিটার। মাথাভাঙা নদীর উপরে একটি সেতু তৈরি হলেই খুব সহজে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করা সম্ভব।’’ প্রাগপুর থেকে ঢাকার দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার মতো। শিকারপুর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার গেলে বাংলাদেশের ভেড়ামারা রেল জংশন। সেখান থেকে সহজেই সে দেশের নানা জায়গায় চলে যাওয়া যায়। সাংসদ বলেন, ‘‘দুই দেশের নানা কৃষিজ ফসলও বাণিজ্যিক ভাবে লেনদেন করা যাবে। তাতে দু’পারের মানুষই অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে উপকৃত হবেন।”

করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া বলেন, “শিকারপুর ও প্রাগপুরের মাঝে চেকপোস্ট ও সড়ক যোগাযোগের প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয় হওয়ায় এখনই কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে প্রস্তাবিত এলাকায় চেকপোস্ট হলে দু’দেশেরই ভাল হবে। তা যাতে হয়, তার জন্য আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন