ছবি: পিটিআই।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে লোকসভা ভোট শুরুর ঠিক আগের দিন নতুন করে রাফাল-অস্ত্র হাতে পেয়ে গেলেন রাহুল গাঁধী। চাপের মুখে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার কৌশলই নিলেন নরেন্দ্র মোদী।
রাফাল-চুক্তি নিয়ে মোদীকে নিশানা করে রাহুল ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান তুলেছিলেন, যা সারা দেশে সাড়া ফেলেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আরও চাপে পড়া মোদী গোয়ায় গিয়ে রাহুলকে বিঁধতে গিয়ে বললেন ‘‘পকেটমাররা নিজের কাজের সময় অন্যের দিকে চোর চোর বলে হল্লা করে।’’ গোয়ায় প্রচারে গিয়ে রাফাল-প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘সামরিক বাহিনী রাফাল কেনার কথা বলায়, কংগ্রেসের নামদার পরিবারের দালাল সেখানেও জুটে গিয়েছিল। ফলে চুক্তিই আটকে যায়, সেনার শক্তি কমতে থাকে।’’
রাফাল চুক্তিতে নতুন তথ্য সংবাদমাধ্যমের হাত ধরে প্রকাশ্যে আসায় তাকে হাতিয়ার করেই সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই তদন্তের আর্জি পুনর্বিবেচনার দাবি তোলেন যশবন্ত সিন্হা, অরুণ শৌরি ও প্রশান্ত ভূষণ। কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল অভিযোগ তুলেছিলেন, এই নথি চুরি গিয়েছে। পরে সরকার ব্যাখ্যা দেয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গোপন নথির প্রতিলিপি বার করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আজ রায় দিয়েছে, বাক্স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার মেনেই সংবাদমাধ্যমে ওই নথি প্রকাশ হয়েছে। নথি প্রকাশে বাধা রয়েছে, এমন আইন নেই। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, প্রামাণ্য নথি আইনে ওই ফাঁস হওয়া তথ্য আদালতে গ্রাহ্য হতে পারে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের মত, গ্রাহ্য হবে কি না, তা নথির প্রাসঙ্গিকতার উপরে নির্ভর করছে। উৎসের ভিত্তিতে নয়। ওই নথি ‘গোপনীয়তা আইনের আওতায় আসে বলেও কেন্দ্র আপত্তি তুলেছিল। যুক্তি ছিল, তথ্যের অধিকারের আইনেও এই নথি বাইরে আসতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের মত, এক বার যখন তা প্রকাশ্যে এসেছে, তখন আইনের রক্ষাকবচ খাটে না।
রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে দিল্লিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছেন, এই রায় তাঁদের জন্য ধাক্কা নয়। কিন্তু তাঁর শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট ছিল, সুপ্রিম কোর্ট রাফাল চুক্তির নতুন নথি খতিয়ে দেখতে রাজি হওয়ার পরে আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় বিজেপি শিবির। নির্মলার প্রশ্ন, ‘‘রাহুল গাঁধী কোথা থেকে বললেন যে, কোর্ট মেনে নিয়েছে যে চৌকিদারই চোর, অনিল অম্বানীকে ৩০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। এটা আদালতের অবমাননা।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কংগ্রেসের আক্রমণের জবাব দিতে মোদী কংগ্রেসের জমানারই প্রতিরক্ষা চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। পশ্চিমবঙ্গে রাহুল পাল্টা বলেন, ‘‘রাফাল মামলায় টাকা চুরি হয়েছে। তার তদন্ত হবে। যে চুরি করেছে, তার সাজা হবে।’’ নির্মলার কটাক্ষ, ‘‘যিনি নিজেই জামিনে, সংসদে ডবল এএ শুনিয়েছিলেন। এখন মনোনয়নের সময় আরবি (রবার্ট বঢরা)-কে নিয়ে গিয়েছেন! মিশেল মামার পরিবার মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছে!’’