সরকার-নির্ধারিত সংখ্যার বেশি বাতিল নোট জমিয়ে রাখলে জরিমানা হবে ঠিকই। কিন্তু হাজতবাস করতে হবে না।
আগামী বছরের ৩১ মার্চের পরেও কারও কাছে অচল ৫০০-১০০০ টাকার নোট থাকলে বা পুরনো নোটে কেউ লেনদেন করলে জরিমানার ব্যবস্থা করতে অর্ডিন্যান্স আনছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই অর্ডিন্যান্সের খসড়ায় কিছু ক্ষেত্রে ৪ বছর পর্যন্ত জেলের বিধান থাকলেও শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তাতে অনুমোদন দেয়নি। আজ আইন মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, এ ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধানই রয়েছে অর্ডিন্যান্সে।
সরকারি সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই রাষ্ট্রপতির সইয়ের জন্য তাঁর কাছে অর্ডিন্যান্স পাঠানো হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির মঞ্জুরি মিললে ৩১ ডিসেম্বর থেকেই অর্ডিন্যান্স জারি হবে। সে ক্ষেত্রে, ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কে অচল নোট জমা দেওয়ার যে বাড়তি সময়সীমা রয়েছে, সেখানে কেউ ভুল তথ্য দিয়ে নোট জমা দিতে গেলে জরিমানার ব্যবস্থা করা যাবে। যিনি নোট জমা দিচ্ছেন, তাঁকে ব্যাখ্যা দিতে হবে, কেন এত দিনে তিনি নোট জমা দিতে পারেননি। সেই ব্যাখ্যায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সন্তুষ্ট না হলেই জরিমানা বসবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ভুল তথ্য দিলে ন্যূনতম জরিমানার পরিমাণ হবে ৫ হাজার টাকা।
আইন মন্ত্রক শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, ব্যক্তিগত ভাবে কারও কাছে সর্বাধিক ১০টি অচল নোট থাকতে পারে। গবেষণা বা শিক্ষাক্ষেত্রের প্রয়োজনে সর্বাধিক ২৫টি অচল নোট রাখা যেতে পারে। এর বেশি অচল নোট থাকলেই শাস্তির মুখে পড়তে হবে। তবে অচল নোটে লেনদেনে শাস্তি নিয়ে তেমন আপত্তি না উঠলেও শুধুমাত্র কাছে রাখলে কেন শাস্তি হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।
আইন মন্ত্রক সূত্রের যুক্তি, অচল নোট কারও কাছে বিরাট পরিমাণে থেকে গেলে তার অপব্যবহার হতে পারে। এর ফলে সমান্তরাল অর্থনীতি চালু হতে পারে। কালো টাকার কারবারিরা পুরনো নোটকেই ‘টোকেন মানি’ হিসেবে ধরে নিয়ে লেনদেন চালিয়ে যেতে পারেন। সেই সম্ভাবনাকে একেবারে বিনষ্ট করে দিতেই আইনে এই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এই শাস্তির ভয় থাকলে কালো টাকার মালিকরা যে কোনও ভাবে অচল নোট থেকে মুক্তি পেতে চাইবেন। যাঁরা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাঙ্কে অচল নোট জমা দেবেন না, এর পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কেও টাকা জমার ঝুঁকি নেবেন না, তাঁরা অন্য কোনও ভাবে অচল নোট নষ্ট করতে চাইবেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের ধরা পড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।