তালিকায় নেই বাবুলও

শুধু বাংলাই বিমুখ আদর্শ গ্রাম প্রকল্পে

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাব মেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ ঢাকা সফরে গেলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে রইল এটি। যদিও মোদী সরকারের অনেক প্রস্তাবেই এখনও মুখ ফিরিয়ে রেখেছে বাংলা। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা যার অন্যতম উদাহরণ। কেন্দ্রের হিসেব মতো পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য যার অধিকাংশ সাংসদ এই প্রকল্পের জন্য কোনও গ্রামের নাম প্রস্তাব করেননি। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তালিকা জানাচ্ছে, লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মাত্র তিন জন সাংসদ তাঁদের নির্বাচনী এলাকার একটি করে গ্রামের নাম প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে দু’জন তৃণমূলের। সুলতান আহমেদ ও বিজয়চন্দ্র বর্মণ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০৩:১৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাব মেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ ঢাকা সফরে গেলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে রইল এটি। যদিও মোদী সরকারের অনেক প্রস্তাবেই এখনও মুখ ফিরিয়ে রেখেছে বাংলা। প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা যার অন্যতম উদাহরণ। কেন্দ্রের হিসেব মতো পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র রাজ্য যার অধিকাংশ সাংসদ এই প্রকল্পের জন্য কোনও গ্রামের নাম প্রস্তাব করেননি। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তালিকা জানাচ্ছে, লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মাত্র তিন জন সাংসদ তাঁদের নির্বাচনী এলাকার একটি করে গ্রামের নাম প্রস্তাব করেছেন। এর মধ্যে দু’জন তৃণমূলের। সুলতান আহমেদ ও বিজয়চন্দ্র বর্মণ। তৃতীয় জন বিজেপির সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তালিকায় নেই বিজেপির আর এক সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র নাম!

Advertisement

যদিও এই সরকারি তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল। তাঁর দাবি, প্রশাসনিক স্তরে তালিকা তৈরিতে হয়তো ভ্রান্তি হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাঁর বেছে নেওয়া গ্রামে এই প্রকল্পের রূপায়ণ এতই ভাল হচ্ছে যে মুম্বইয়ে দলের প্রশিক্ষণ শিবিরে এ ব্যাপারে বক্তৃতা দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাঁকে। তালিকা শুধরে তাঁর নির্বাচিত গ্রামটির নাম যোগ করার জন্য এ দিন রাতেই তিনি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের আমলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

প্রত্যেক সাংসদ অন্তত একটি করে গ্রাম বেছে নিয়ে তাকে আদর্শ গ্রাম করে তুলুন সাংসদ তহবিলের টাকায়— গত স্বাধীনতা দিবসে এই ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব। বছর ঘোরার মুখে প্রকল্পটি কী অবস্থায় রয়েছে, আজ তা এক বৈঠকে খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী চৌধুরি বীরেন্দ্র সিংহ। পরে একটি রিপোর্টও প্রকাশ করে তাঁর মন্ত্রক। দেখা যাচ্ছে, লোকসভার ৫৪৩ জন সাংসদের মধ্যে মাত্র ৫১ জন কোনও গ্রামের নাম প্রস্তাব করেননি। তাঁদের মধ্যে ৩৯ জনই পশ্চিমবঙ্গের। বাকি ১২ জন লোকসভা সদস্যের মধ্যে ৭ জন দিল্লির। এখানকার সাংসদদের যুক্তি, দিল্লিতে গ্রামই নেই!

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার সদস্য ১৬ জন। তাঁদের কেউ কোনও গ্রামের নাম প্রস্তাব করেননি। তৃণমূলের সুলতান বেছে নিয়েছেন, উলুবেড়িয়ার বানিবান গ্রাম ও বিজয়চন্দ্র ময়নাগুড়ির চুড়াভাণ্ডার। বিজেপির অহলুওয়ালিয়া বেছেছেন নকশালবাড়ির হাতিঘিশা গ্রাম।

কেন কোনও গ্রামের দায়িত্ব নেননি তৃণমূলের সাংসদরা? রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম-শহরে প্রচুর উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। উন্নয়নের জন্য কোনও ভাল প্রস্তাবকে আমরা সর্বদাই স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আদর্শ গ্রাম প্রকল্পে একটি মৌলিক ত্রুটি রয়েছে। এক জন সাংসদের এলাকায় অসংখ্য গ্রাম থাকে। তার কোনও একটিকে বেছে নিলে অন্য গ্রামগুলির সঙ্গে বৈষম্য তৈরি হবে। মনে হবে তাদের সঙ্গে বঞ্চনা করা হচ্ছে। তৃণমূল সমাজের সব অংশের সমান উন্নয়নের ভাবনায় বিশ্বাস করে।’’

ডেরেকের যুক্তির সঙ্গে কংগ্রেস, এমনকী বিজেপির অনেক নেতাও একমত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব করায়, অধিকাংশ বিজেপি সাংসদকে আদর্শ গ্রাম বাছতে হয়েছে। আবার বিজেপি যাতে সমালোচনা না করতে পারে সেজন্য অমেঠী ও রায়বরেলীতে রাহুল গাঁধী ও সনিয়া গাঁধীও একটি করে গ্রাম বেছে নিয়েছেন। তবে এর পাশাপাশি কেন্দ্রের সমালোচনাও করছেন সনিয়া। কংগ্রেসের মুখপাত্র সত্যব্রত চতুর্বেদী বলেন, ‘‘প্রকল্পটিতে মৌলিক ত্রুটি তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে এই প্রকল্পের জন্য পৃথক তহবিলের ব্যবস্থাও সরকার করেনি। আসলে এটাও মোদীর বিপণনের কৌশল মাত্র। বিরোধীদের কথা ছেড়ে দিন, পাঁচ বছর পরে দেখা যাবে দেশে কতগুলি আদর্শ গ্রাম গড়েছেন বিজেপির সাংসদরা!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন