—ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর হয়ে প্রচারের জন্য গত লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে খান পঁয়ত্রিশ কবি সম্মেলন করেছিল বিজেপি। মুখতার আব্বাস নকভি অবশ্য সে সময় বলেছিলেন, ‘‘কোনও বিজেপি নেতাকে এর ধারেকাছেও পাবেন না। এটা একেবারেই সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। কবিরা মোদীর বার্তা এবং ধ্যানধারণার কথাই তাঁদের কাব্যে প্রকাশ করবেন।’’
সে ছিল এক অভিনব কাব্যময় প্রচার কৌশল। তাতে লাভও হয়েছিল বিজেপির। কিন্তু উনিশের লোকসভার আগে মুশায়রার ঐতিহ্যবাহী লখনউয়ে সেই কবিতাকেই যে মোদীর বিরুদ্ধে অস্ত্র করছেন বিরোধীরা!
নাম বদল নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ‘খ্যাতি’ ছড়িয়েছে সব মহলে। যোগী নাকি নাম শুনলেই বদলে দিচ্ছেন! সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে ‘মিম’-এর ছড়াছড়ি! আর এটা নিয়েই কবিতা লিখে ফেলেছেন এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। টুইটারে অখিলেশের কবিতা, ‘বন্ধ পরে হ্যায় সারে কাম/বিখরা পরা সব সামান/তারাক্কি কে রুকে হ্যায় রাস্তে/বদল রাহে হ্যায় বস নাম!’ যার মোদ্দা কথা, ‘কাজ হচ্ছে না, শুধু নাম বদল!’
প্রতিবাদী কবিতার আসরে যোগ দিয়েছেন খোদ যোগী সরকারেরই শরিক দল সুহেলদেও ভারতীয় সমাজ পার্টির-র নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ওম প্রকাশ রাজভড়। ইনি বেশ কিছু দিন ধরেই বিদ্রোহী। যোগী তথা মোদী-শাহকে বারবার অস্বস্তিতে ফেলেছেন নানা বিষয়ে। তাঁর সাম্প্রতিক কবিতাটি হল, ‘দিওয়ালি মে আলি বসে/রাম বসে রামজান/অ্যায়সা হোনা চাহিয়ে/আপনা হিন্দুস্থান।’
এই লখনউয়ের আমিনাবাদের একটি পরিচিত দৃশ্য মনে করে অটলবিহারী বাজপেয়ী লিখেছিলেন, ‘টোকরি মে ফুলো কি পাত্তিয়া রাখি হুয়ি/বিচ মে মোমবাত্তি জ্বলতি হুয়ি..।’ বিরোধীদের কাব্যবাণে বিদ্ধ বিজেপি এখন শুধু দেখে আর শুনেই যাচ্ছে। তাদের সমস্যা হল, বাজপেয়ীর প্রয়াণের পরে দলে পাতে দেওয়ার মত কবি নেই। বেঙ্কাইয়া নায়ডু কথায় কথায় ছড়া কাটতেন। কিন্তু তিনি এখন রাষ্ট্রপতি, দলের ঊর্দ্ধে। মনোজ তিওয়ারির দৌড় ভোজপুরি গান। সে ক্ষেত্রে কি ২০১৪-র মতো ভাড়াটে কবি দিয়ে ‘অচ্ছে দিন’-এর দ্বিতীয় সংস্করণ করতে হবে? এক বিজেপি নেতার কথা, ‘‘দেখবেন, অটলজির ঐতিহ্য উত্তরপ্রদেশে মরে যায়নি।’’