ফের কি নিজেদের সামরিক বিমানেই অবৈধবাসী ভারতীয়দের ফেরত পাঠাবে আমেরিকা? —ফাইল চিত্র।
আরও ১১৯ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে নিয়ে অমৃতসরে অবতরণ করতে চলেছে আমেরিকার বিমান। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ অমৃতসরে অবতরণ করার কথা বিমানটির। অবৈধবাসীদের নিয়ে আমেরিকা থেকে অমৃতসরে প্রথম বিমানটি নেমেছিল ৫ ফেব্রুয়ারি। অভিযোগ, বিমানের মধ্যে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছিল অবৈধবাসী ১০৪ জনকে। তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন আমেরিকা-ফেরত অনেকে। এ বারেও ১১৯ জনকে সে ভাবে ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি।
শনিবার কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে লেখেন, “বিমানে করে যাঁদের আনা হবে, তাঁদের হাতে কি হাতকড়া আর পায়ে দড়ি বাঁধা থাকবে? ভারতীয় কুটনীতির জন্য এটা একটা পরীক্ষা।”
ওই ১১৯ অবৈধবাসীর মধ্যে ৬৭ জনই পঞ্জাবের বাসিন্দা। হরিয়ানা থেকে রয়েছেন ৩৩ জন। এ ছাড়া, গুজরাতের আট জন, উত্তরপ্রদেশের তিন জন, গোয়ার দু’জন, মহারাষ্ট্রের দু’জন, রাজস্থানের দু’জন, হিমাচল প্রদেশের এক জন এবং জম্মু ও কাশ্মীরের এক জনকে দ্বিতীয় দফায় ফেরত পাঠাচ্ছে আমেরিকা। চলতি সপ্তাহেই তৃতীয় দফার অবৈধবাসীদের নিয়ে তাদের আরও একটি বিমানের ভারতে আসার কথা। তবে তৃতীয় দফার বিমানটির অবতরণের দিনক্ষণ কিংবা বিমানে কোন রাজ্যের কত জন আছেন, এখনও জানায়নি আমেরিকা।
অন্য দিকে, অবৈধবাসীদের বিমান কেন পঞ্জাবেই নামানো হচ্ছে, কেন দেশের রাজধানী দিল্লিতে ওই বিমান নামছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। তাঁর অভিযোগ, পঞ্জাবকে গোটা দেশের সামনে ছোট করার উদ্দেশ্যেই মার্কিন বিমানগুলি অমৃতসরে নামানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়েছেন তিনি। তবে একই সঙ্গে জানিয়েছেন, আমেরিকা-ফেরত অবৈধবাসীদের যথাসম্ভব সাহায্য করবে তাঁর প্রশাসন।
সম্প্রতি আমেরিকা সফর সেরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে অবৈধবাসী সমস্যা নিয়েও তাঁর আলোচনা হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, আমেরিকা-ফেরত এই অভিবাসীদের গ্রহণ করতে তারা প্রস্তুত।
‘হাতকড়া পরিয়ে, শিকলে বেঁধে’ অবৈধবাসী ১০৪ ভারতীয়কে ফেরানোর পরেই সংসদের বাজেট অধিবেশনে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। জবাবি ভাষণে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “বিতাড়িত অবৈধবাসীদের সঙ্গে যাতে কোনও দুর্ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকার আমেরিকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল।’’ সংবাদ সংস্থা পিটিআই যদিও ওই বিমানে দেশে ফেরা কয়েক জনকে উদ্ধৃত করে জানায়, পুরো বিমানযাত্রাতেই তাঁদের হাত-পা বাঁধা ছিল।