নেতাদের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ এ বার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে।
সোমবারই কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ করেছিলেন। আজ ঘরোয়া আলোচনায় একই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিজেপির কিছু নেতাও। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমারের দাবি, ‘‘সব ভিত্তিহীন কথাবার্তা।’’
মোদীকে নিশানা করে আজাদের কিন্তু অভিযোগ, ‘‘আমার সঙ্গে কেউ আর ফোনে কথা বলেন না, কারণ ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। আপনারা আমাদের সন্ত্রাসবাদী বানিয়ে দিয়েছেন। ভয় পাইয়ে কী হাসিল হবে?’’ কংগ্রেস নেতার ওই কথা শুনে বিজেপির এক নেতাও আজ বললেন, ‘‘আমরাই বা কীসে ছাড় পাচ্ছি? আমাদেরও ফোনে আড়ি পাতা হয়।’’
বিজেপি নেতারা যেটুকু তবু রেখেঢেকে বলছেন, সেটি আজ খোলাখুলি বললেন একদা বিজেপির শরিক নেতা শরদ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘৪৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম বার দেখছি শাসক দলের সাংসদ, মন্ত্রীরা বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পান। আগে সব নেতাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। এখন সব বন্ধ।’’
আরও পড়ুন: আড়িপাতার আশঙ্কায় তটস্থ বঙ্গের মন্ত্রীরাও
১৮৮৫ সালে টেলিগ্রাফ আইন অনুসারে কারও ফোনে আড়ি পাততে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। সরকারি তদন্তকারী সংস্থাকে আড়ি পাতার জন্য পর্যাপ্ত কারণও দেখাতে হয়। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, কারণ ছাড়াই আড়ি পাতা হচ্ছে অনৈতিক ভাবে। গোয়েন্দা সংস্থার ‘বাড়াবাড়ি’ নিয়ে মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়াও সম্প্রতি প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন। গোয়েন্দা প্রধানকেও চিঠি লিখেছেন।
কিন্তু কেন আদৌ আড়ি পাততে চাইবে সরকার? গুলাম নবি আজাদের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিভাজন তৈরি করাই লক্ষ্য। ইডি, আয়কর, এনআইএ-কে দিয়ে ভয়ের রাজনীতি করানো হচ্ছে। যদিও বিজেপির এক সাংসদের মত হল, যখনই যে ক্ষমতায় থাকে, নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ফোনে আড়ি পাতা হয়। ইন্দিরা গাঁধীর সময়েও একই কাজ করা হত। ইউপিএ জমানায় তখনকার বিরোধী দলের নেতা অরুণ জেটলির ফোনেও আড়ি পাতা হয়েছে বলে অভিযোগ। সে মামলা আদালতে চলছে। বেসরকারি সংস্থারাও বেআইনি ভাবে এখন এই কাজে নেমে পড়েছে। জেটলির মামলায় বেসরকারি গোয়েন্দাদের সঙ্গে দিল্লি পুলিশের কিছু লোকও ধরা পড়েছেন।