ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে জম্মু ও কাশ্মীরে প্রাণঘাতী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ তুলল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া বলেন, ‘‘কাশ্মীরে নিরপরাধ মানুষকে মারতে ও তাঁদের সম্পত্তি ধ্বংস করতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করছে সেনা। এর কড়া সমালোচনা করে আন্তর্জাতিক মহলের নজরদারির দাবি তুলেছে পাকিস্তান।
সম্প্রতি পুলওয়ামা জেলার বামনু ও কাকপোরায় উদ্ধার হওয়া কাশ্মীরি যুবকদের দগ্ধ দেহ ঘিরে প্রশ্ন তুলেছে পাকিস্তান। সূত্রের খবর, পুলওয়ামায় ভারতীয় সেনার হাতে ধ্বংস হয়ে যাওয়া পাঁচটি বাড়ি থেকে জনা কয়েক কাশ্মীরি যুবকের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহগুলি এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে সেগুলি চেনা পর্যন্ত যাচ্ছিল না। পাকিস্তানের দাবি, ওই দেহগুলি দেখেই বোঝা যাচ্ছে পুলওয়ামায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল সেনা। জাকারিয়ার অভিযোগ, ভারত রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে অন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। গোটা বিশ্বের নজর এখন পাক মদতপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের উপর পড়েছে। সেই নজর ঘুরিয়ে দেওয়ারই চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। নয়াদিল্লির মতে, আমেরিকা ও ইজরায়েল— প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পর পর দুটি সফরে পাকিস্তানের চরিত্রটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তার ফলে পাকিস্তান যে যথেষ্ট চাপে, গত কাল একাধিক পাক সংবাদপত্রের রিপোর্ট থেকে তা বোঝা গিয়েছে। নয়াদিল্লির মতে, আন্তর্জাতিক মনোযোগ ঘোরাতেই এখন তাই ভারতকে নিশানা করছে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন: চিনকে বার্তা দিতে তিন দেশের মহড়া
ইসলামাবাদের অভিযোগ, আফগানিস্তানেও অশান্তি ছড়ানোর পিছনে রয়েছে ভারতের হাত। আফগানিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কার্যকলাপ চালাচ্ছে ভারত, যাতে সে দেশে অস্থিরতা আরও বাড়ছে। বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ভারতের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কেনা নিয়েও আজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাকারিয়া। তিনি জানান, এ ভাবে চললে আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষায় ভারতের ভূমিকা নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারবে না পাকিস্তান। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের দাবি, তাদের দেশে তালিবান, আল কায়দা বা আইএসের মতো কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সংগঠিত উপস্থিতি নেই। আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত উপজাতি অঞ্চলগুলিতে যে হক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতির কথা বলে ইসলামাবাদ, তাও উড়িয়ে দিয়েছেন পাক মুখপাত্র। তাঁর দাবি,নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষ চাপায় কাবুল। হক্কানি জঙ্গি গোষ্ঠীর আস্তানা আদতে আফগানিস্তানের মাটিতেই।