কাবুলে পাকিস্তানের গুরুত্বে উদ্বিগ্ন ভারত

আপাতত আমেরিকা ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিশালী দেশ শান্তি প্রক্রিয়ার রূপায়ণ তথা তালিবানের সঙ্গে মধ্যস্থতায় পাকিস্তানকে কাজে লাগাতে চাইছে। সেখানেই আপত্তি নয়াদিল্লির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মে ২০১৮ ০২:৩৮
Share:

কাবুলে ধারাবাহিক হিংসার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক শক্তির কাছে ক্রমশ প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে পাকিস্তানের। গোটা বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকের। বিদেশ মন্ত্রকের এক অংশ ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে, পশ্চিমের দেশগুলি বহু দূর থেকে কিছু পূর্বনির্ধারিত ধারণার ভিত্তিতে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর নিদান দিচ্ছে। আপাতত আমেরিকা ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিশালী দেশ শান্তি প্রক্রিয়ার রূপায়ণ তথা তালিবানের সঙ্গে মধ্যস্থতায় পাকিস্তানকে কাজে লাগাতে চাইছে। সেখানেই আপত্তি নয়াদিল্লির।

Advertisement

প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের নিরাপত্তায় আফগানিস্তানের পরিস্থিতির অভিঘাত পড়ছে। আন্তর্জাতিক শক্তির প্রতি নয়াদিল্লির বার্তা, কাবুলের হিংসার পিছনে অন্যতম শক্তি যে পাকিস্তান, এই সত্য স্বীকার করা প্রয়োজন।

আইএস এবং তালিবানকে আলাদা ভাবে বিবেচনা করে আলাদা আলাদা আচরণের পক্ষপাতী ইরান, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ই ইউ) দেশগুলি। কিন্তু সাউথ ব্লক মনে করে, দিনের শেষে সবাই সন্ত্রাসবাদী এবং নিজেদের স্বার্থেই পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে চলে।

Advertisement

গত সপ্তাহে ইইউ-এর বিশেষ দূত রোনান্ড কোবিয়া নয়াদিল্লি এসেছিলেন আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে। তাঁর বক্তব্য, মার্চ মাসে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি তালিবানের উদ্দেশ্যে যে শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন, তাকে সমর্থন করুক ভারত। শুধু ভারতই নয়, বিভিন্ন রাষ্ট্র যাতে এই প্রস্তাব সমর্থন করে, সেজন্য জনমত তৈরি করতে চাইছে ইইউ।

আরও পড়ুন: নেপালে ভারতীয় দূতাবাসে বিস্ফোরণ: দিল্লি থেকে ধৃত মাওবাদী নেতা

কূটনৈতিক সূত্রের খবর, নয়াদিল্লি সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে এই প্রস্তাবটি আদৌ কোনও শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে না। নয়াদিল্লি মনে করে, আফগানিস্তানে কৌশলগত প্রভাব ধরে রাখার জন্য পাকিস্তান সমানে তালিবানকে ব্যবহার করছে। প্রকৃতপক্ষে ভারতকে চাপে রাখার কৌশল সেটি।

অথচ শান্তি প্রস্তাবে পাকিস্তানের এই নেতিবাচক ভূমিকা সম্পর্কে উদাসীনতা চোখে পড়ছে। পাশাপাশি, এই মুহূর্তে রাশিয়া এবং ইরানের মতো দেশও আইএস-এর থেকে বাঁচতে তালিবানের শরণাপন্ন হয়েছে। আর রাশিয়ার সঙ্গে আফগান তালিবানের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে সেই পাকিস্তান।

বিদেশমন্ত্রকের বক্তব্য, এই মুহূর্তে পাকিস্তান-সহ বিভিন্ন দেশ নিজেদের মতো করে তালিবানের সঙ্গে কথা বলে চলেছে। ফলে সমাধানের বদলে সঙ্কট জটিল হচ্ছে বেশি। আইএস এবং তালিবানকে পৃথক ভাবে দেখার এই পশ্চিমী ধারণাটিই যে ত্রুটিপূর্ণ, সে কথাও ইইউ-এর বিশেষ দূতকে জানিয়েছে সাউথ ব্লক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন