National News

পাকিস্তান মৃত্যুফাঁদ, দেশে ফিরে বললেন উজমা

‘পাকিস্তান একটা মৃত্যুফাঁদ’- ঘরে ফিরে এভাবেই পাকিস্তান সম্পর্কে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন উজমা আহমেদ। দিল্লির মেয়ে উজমা ইসলামাবাদ গিয়েছিলেন তাহির আলি নামে ফেসবুকে পাতানো এক বন্ধুর বাড়িতে। গত ১ মে ইসলামাবাদে পৌঁছন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ২০:০২
Share:

মেয়ের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রকে উজমা।

‘পাকিস্তান একটা মৃত্যুফাঁদ’- ঘরে ফিরে এভাবেই পাকিস্তান সম্পর্কে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন উজমা আহমেদ। দিল্লির মেয়ে উজমা ইসলামাবাদ গিয়েছিলেন তাহির আলি নামে ফেসবুকে পাতানো এক বন্ধুর বাড়িতে। গত ১ মে ইসলামাবাদে পৌঁছন। ৩ মে তাহির তাঁকে জোর করে বিয়ে করেন। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল, জানিয়েছেন উজমা। পাক আদালতের দ্বারস্থ হয়ে অবশ্য তিনি সুবিচারই পেয়েছেন। উজমা আহমেদকে পাকিস্তানের আদালত ভারতে ফেরানোর নির্দেশ দেয়। আজ, বৃহস্পতিবার তিনি দেশে ফিরেছেন। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নিজে টুইট করে বৃহস্পতিবার সকালেই উজমার দেশে ফেরার কথা জানান। সুষমা নিজে দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রকের অফিসে তাঁকে স্বাগত জানান। তার পর বিদেশ মন্ত্রকের তত্ত্বাবধনেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শোনান।ছিলেন তাঁর স্বামী এবং মেয়েও।

Advertisement

সাংবাদিকদের সামনে কান্নাভেজা গলায় উজমা বলেন, ‘‘পাকিস্তানে ঢোকাটা সহজ। সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটা প্রায় অসম্ভব। পাকিস্তান হল একটা মৃত্যুফাঁদ। অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের পর যে মহিলারা সেখানে গিয়েছেন, তাঁদের আমি দেখেছি। তাঁরা ভয়ঙ্কর খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। ওখানে প্রতিটি ঘরে একজন পুরুষের দুটো, তিনটে এমনকী চারজন স্ত্রীও রয়েছে।’’

এখনও অনেক মহিলা তাঁর মতোই পাকিস্তানে বন্দি রয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন উজমা। তিনি বলেন, ‘‘আরও কিছুদিন ওখানে থাকলে আমি মারা যেতাম। ওরা টোপ দিয়ে ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়ার মতো পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি থেকে মেয়েদের নিয়ে যায়।’’ শুধু মেয়েরা নন, ছেলেরাও সে দেশে নিরাপদ নয় বলেই অভিমত উজমার। এ দিন কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে ধন্যবাদ জানান উজমা।

Advertisement

১ তারিখ ইসলামাবাদ যান উজমা। ৭ তারিখ থেকেই ভারতীয় হাই কমিশনের রয়েছেন তিনি। এই সাত দিনের মধ্যে কীভাবে পাকিস্তান ও সে দেশের নাগরিকদের সম্পর্কে কীভাবে এতটা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পাকিস্তানের নাগরিক তাহির তাঁকে বিপদে ফেলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁর ভারতে ফেরার ব্যাপারে পাক প্রশাসন ও সে দেশের আদালতের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহে খবরের শিরোনামে আসেন উজমা। দিল্লির বাসিন্দা উজমা গত ৭ মে পাকিস্তানের ভারতীয় হাই কমিশনে জানান, তাহির আলি নামে ওই পাক যুবক তাঁকে জোর করে নিকাহনামায় সই করিয়েছেন। তাহির তাঁর পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও আটকে রেখেছেন বলে উজমা জানিয়েছিলেন। উজমা জানান, ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল তাহিরের সঙ্গে। তার থেকে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের সূত্রেই দিল্লি থেকে ইসলামাবাদ যাওয়া উজমার। কিন্তু ইসলামাবাদে তাহিরের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে বন্দুকের মুখে পড়তে হবে এবং তাহিরকে বিয়ে করতে হবে, এমনটা উজমা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।

আরও পড়ুন:গাড়ি থেকে নামিয়ে চার জনকে গণধর্ষণ, বাধা দিয়ে সঙ্গী খুন উত্তরপ্রদেশে

ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পৌঁছয় বিষয়টি। বছর কুড়ির এই ভারতীয় তরুণীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার তাঁকে ভারতে ফেরার অনুমতি দেয় ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ফেরার সময় যাতে নিরাপত্তাজনিত কোনও সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, তা নিশ্চিত করতেও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। রায় ঘোষণার পর উজমার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তাহির। কিন্তু, তাতে রাজি হননি ওই ভারতীয় তরুণী।

ছবি: পিটিআই

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement