খেলনা নয়। বাচ্চাদের হাতে এখন মর্টার শেলের অংশ। জম্মুতে বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।
উরি হামলার পরে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু সম্প্রতি ব্রিকসের মঞ্চে ভারতের ডাকে সাড়া দিয়ে সরাসরি তাদের আক্রমণে রাজি হয়নি কোনও দেশই। বরং প্রকাশ্যেই তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। ফলে কিছুটা অক্সিজেন পেয়ে সংঘর্ষবিরতি ভাঙা নিয়ে দিল্লিকে পাল্টা চাপ দিতে আসরে নেমেছে ইসলামাবাদ।
আজ পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র নাফিস জাকারিয়া দাবি করেন, চলতি বছরে ভারত মোট ৯০ বার সংঘর্ষবিরতি ভেঙেছে। এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে আজ ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনারকে তলব করে ইসলামাবাদ। ভারত ও পাকিস্তানে রাষ্ট্রপুঞ্জের সামরিক পর্যবেক্ষকের দফতরেও সংঘর্ষবিরতি ভাঙা নিয়ে আলাদা চিঠি পাঠিয়েছে পাক সেনা।
সেইসঙ্গে ভারত সিন্ধু জলচুক্তি ভাঙলে কড়া পদক্ষেপ করার হুমকি দিয়েছে ইসলামাবাদ। আজ পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে ভারতের কার্যকলাপের উপরে কড়া নজর রাখছে ইসলামাবাদ। জাকারিয়ার অভিযোগ, কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর অত্যাচার থেকে নজর ঘোরাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে দিল্লি। তবে পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ভাবে একঘরে করার চেষ্টা সফল হয়নি। কূটনীতিকদের মতে কেবল রাশিয়া বা চিনের মতো ব্রিকসভুক্ত দেশ নয়, আমেরিকাও পাকিস্তানের সমালোচনার সুর নরম করেছে। মায়ানমারও ভারতের ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের সমালোচনায় রাজি হয়নি। বরং আজ ইসলামি দেশগুলির সংগঠন ‘অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ’ কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। ফলে ইসলামাবাদ কূটনৈতিক ভাবে সুবিধেজনক অবস্থানে রয়েছে বলেই মনে করছে পাক সরকার।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে রাজি। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘মার্কিন বন্ধুদের মধ্যস্থতার প্রস্তাব সব সময়েই স্বাগত।’’
কমেনি কাশ্মীরে পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিদের গতিবিধিও। আজও জম্মুর কাঠুয়া জেলায় একটি বড় অনুপ্রবেশের চেষ্টা রুখেছে বিএসএফ। কাঠুয়া জেলার ববিয়া এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে সীমান্ত পেরনোর চেষ্টা করে চার থেকে ছ’জন জঙ্গির একটি দল। তখনই সেখানে হাজির হয় বিএসএফের টহলদারি দল। শুরু হয় সংঘর্ষ। পরে জঙ্গিরা পালিয়ে যায়।
তবে উপত্যকার পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকা হরতাল জারি থাকলেও শ্রীনগর ও রাজ্যের অন্য প্রান্তের রাস্তায় দেখা গিয়েছে অনেক বেশি যানবাহন। সাম্প্রতিক অশান্তির সময়ে দেশ-বিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে রাজ্য সরকারের ১২ জন কর্মীকে বরখাস্ত করেছে প্রশাসন।