রাশিয়া থেকে দিল্লির পথে। বিমানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
ষাট বছরে এই প্রথম ইসলামাবাদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছে মস্কো। পাকিস্তানকে সামরিক হেলিকপ্টার ও বিমান সরবরাহে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। তবে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় মনে করছেন, এ নিয়ে ভারতের বিচলিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
পাঁচ দিনের ‘সফল’ মস্কো সফর শেষে রাষ্ট্রপতি আজ দেশে ফেরেন। বিমানে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে পাকিস্তান প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে মস্কো-ইসলামাবাদ সামরিক সমঝোতা প্রসঙ্গ কি উত্থাপন করেছেন তিনি? রাষ্ট্রপতির মন্তব্য, ‘‘প্রতিরক্ষা সমঝোতার প্রশ্নে মস্কো আমাদের খুবই নির্ভরশীল বন্ধু।’’ অন্য কোনও দেশের সঙ্গে রাশিয়া যদি সম্পর্ক তৈরি করে, তা হলেও ভারতের উপর তার আঁচ আসবে না বলেই বার্তা দিতে চান তিনি।
কূটনীতিতে ভারসাম্য হারানোর অভিযোগ এনে দেশের মাটিতে বিরোধীরা যদিও মোদীকে নিশানা করতে শুরু করেছেন। প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী আনন্দ শর্মার মতে, ‘‘রাশিয়ার মতো বন্ধু দেশও এখন অখুশি। মস্কো যে ভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক গড়ে তুলছে তা উদ্বেগজনক।’’ তবে বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র জানাচ্ছে, এ ব্যাপারে নয়াদিল্লিকে আশ্বস্ত করেছে মস্কো। সাউথ ব্লকের এক কূটনীতিকের কথায়, পশ্চিমী নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অর্থনীতি কিছুটা চাপে রয়েছে। রুশ অর্থনীতি প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদন ও বিক্রির উপর অনেকটা নির্ভরশীল। সেই প্রেক্ষাপটেই বিষয়টিকে দেখা দরকার। সাবেক সোভিয়েত জমানা থেকেই ভারত ৭০ শতাংশ প্রতিরক্ষা সামগ্রী রাশিয়া থেকে আমদানি করে। নয়াদিল্লিকে মস্কো আশ্বস্ত করেছে যে তারা এমন কোনও পদক্ষেপ করবে না যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ঘটনা হল, সাবেক সোভিয়েত জমানা থেকে নয়াদিল্লি-মস্কো বন্ধুত্ব থাকলেও দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আয়তন খুবই কম। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যের তুলনায় তা এক শতাংশও নয়। সে ব্যাপারে প্রণববাবুর ব্যাখ্যা, নয়ের দশকে যখন আর্থিক উদারীকরণের পথে হাঁটে ভারত, তখন অস্থিরতা চলছিল রাশিয়ায়। বাণিজ্য না বাড়ার পিছনে এটাও একটা কারণ। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন স্থির করেছেন, আগামী দশ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে ৩ হাজার কোটি ডলারে ও বিনিয়োগকে ১ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছে দেবেন।