প্রথম সপ্তাহ গোটাটাই ভেস্তে গিয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় সপ্তাহ। কিন্তু ঝড়ের পূর্বাভাস সেখানেও। বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে এ বার কংগ্রেসের মতোই সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে আলাদা ভাবে। আলাদা মঞ্চে। সব মিলিয়ে ফের প্রথম সপ্তাহের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা দ্বিতীয় সপ্তাহেও।
প্রথম সপ্তাহে কংগ্রেস সংসদে বিজেপি বিরোধিতায় উচ্চগ্রামে সরব হলেও, তৃণমূলের আপাত নীরব অবস্থান জন্ম দেয় একাধিক প্রশ্নের। সিপিএম-কংগ্রেসের মতো দলগুলি অভিযোগ তোলে, সারদা নিয়ে তৃণমূল এতটাই চাপে যে, দুর্নীতির অভিযোগে নাস্তানাবুদ মোদী সরকারকে আক্রমণ করাও তাদের পক্ষে সমস্যার। দলের এই কৌশলী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ভাবমূর্তি উদ্ধারে তৎপর হন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশেই কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বিক দুর্নীতির বিরোধিতা করে আগামিকাল সংসদ ভবনে প্রবেশের মূল সিঁড়িতে ধর্নায় বসতে চলেছে তৃণমূল। ঠিক তাঁর উল্টোদিকে গাঁধী মূর্তির সামনে তখন কংগ্রেসের ধর্নায় বসার কথা। শাসক শিবিরের দুর্নীতির বিরোধিতার প্রশ্নে তৃণমূল যে পিছিয়ে নেই তা বুঝিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তারা যে কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই বিরোধিতার অভিযানে নামছেন না, আলাদা ধর্নামঞ্চ বেছে নিয়ে সেই বার্তাও দিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দুর্নীতি ছাড়াও, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা, কালো টাকা ফিরিয়ে আনার দাবিতেই কাল সরব হওয়ার কথা তৃণমূল শিবিরের। ইতিমধ্যেই সমস্ত সাংসদকে সকাল ১০টার মধ্যে সংসদে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সকাল সওয়া ১০টা থেকে শুরু হবে ধর্না। তবে বিরোধিতার নামে কোনও ভাবেই মাত্রা ছাড়াতে সাংসদদের বারণ করে দিয়েছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
দুই প্রধান বিরোধী দল দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই যে ভাবে আক্রমনাত্মক মনোভাব নিয়ে নামতে চলেছে তাতে চলতি সপ্তাহে যে অধিবেশন সুষ্ঠু ভাবে চলবে এমন আশা দেখছে না বিজেপি নেতৃত্বও। এমনকী দিশা দেখতে ব্যর্থ খোদ প্রধানমন্ত্রীও। আজ মন কি বাত অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদী সংসদ না চলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা এড়িয়ে যান। বিরোধীরা যে সুষমা স্বরাজ-সহ অন্য বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়েছে তা নিয়েও আজ মুখ খুলতে চাননি প্রধানমন্ত্রী।
ফলে অচলাবস্থা যে জারি থাকবে সে বিষয়ে নিশ্চিত শাসক শিবির।