NPR

জনগণনা নিয়ে সতর্ক করল কমিটি

আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশ জুড়ে জনগণনার প্রথম পর্বের কাজ শুরু হওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০৩:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

এনপিআর প্রশ্নে জট না কাটলে জনগণনা প্রক্রিয়াই ভেস্তে যেতে পারে বলে সরকারকে সতর্ক করে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এনপিআর-এ নতুন প্রশ্নগুলি কেন যুক্ত করা হয়েছে, তারও সদুত্তর মন্ত্রক কর্তারা দিতে ব্যর্থ বলে রিপোর্টে জানিয়েছে তারা। আজ রাজ্যসভায় রিপোর্ট পেশ করেন কমিটির চেয়ারম্যান আনন্দ শর্মা।

Advertisement

আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশ জুড়ে জনগণনার প্রথম পর্বের কাজ শুরু হওয়ার কথা। জনগণনার সঙ্গেই এনপিআর তথ্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কংগ্রেস-তৃণমূল বা বাম শাসিত অধিকাংশ রাজ্য এনপিআর সংক্রান্ত কাজ হতে দেবে না বলে জানিয়েছে। এরই মধ্যে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি চলতি বাজেটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান নিয়ে বৈঠকে বসেন কমিটির সদস্যেরা। এনপিআর খাতে বরাদ্দ নিয়ে আলোচনায় বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যগুলি যেখানে বিরোধিতা করছে, সেখানে কেন একতরফা এনপিআর প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। যার কোনও স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি মন্ত্রক কর্তারা।

এনপিআর প্রশ্নে ওই রাজ্যগুলির অনড় মনোভাব দেখে স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে আজ বলা হয়েছে, এনপিআর প্রশ্নে কেন্দ্র সহমতের পন্থা বার করতে না পারলে জনগণনাও ভেস্তে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, দু’টির তথ্য একই কর্মী একই সময়ে সংগ্রহ করবেন। কমিটির সদস্যদের একাংশের মতে, এনপিআর নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভয়ভ্রান্তি রয়েছে, তাতে জনগণনার কাজে যাওয়া কর্মীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। তাঁরা তথ্য তো পাবেনই না, উল্টে তাঁদের শারীরিক নিগ্রহের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কমিটির সুপারিশ, অনিচ্ছুক রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সহমতে পৌঁছনোর চেষ্টা হোক। প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের মতে, ‘‘জনগণনার তথ্য ঠিকঠাক পাওয়া না গেলে দেশের আর্থিক পরিসংখ্যান ত্রুটিপূর্ণ হবে। কারণ, জনগণনার ভিত্তিতে বাকি সমস্ত আর্থিক পরিসংখ্যান তৈরি হয়।’’

Advertisement

অতীতে দু’বার এনপিআরের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এ বার যে আটটি প্রশ্ন এনপিআরে যোগ করা হয়েছে, তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে কোনও ব্যক্তির মাতৃভাষা কি বা সেই ব্যক্তির পিতা-মাতার জন্মতারিখ, জন্মস্থান জানতে চাওয়ার মতো প্রশ্নগুলি নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, মূলত মুসলিমদের নিশানা করতেই এনপিআর-এ ওই প্রশ্নগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিরোধীদের মতে, এনআরসির প্রথম ধাপ এনপিআর। যার মাধ্যমে মুসলিমদের দেশ থেকে তাড়ানোর চক্রান্ত করেছে সরকার। পাল্টা যুক্তিতে স্থায়ী কমিটির সামনে সরকার জানায়, একটি পরিবার সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য সেই ব্যক্তির বাবা-মায়ের তথ্য জানাও প্রয়োজন। তাই বিশদে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া আদৌ বাধ্যতামূলক নয়।

জনগণনার সঙ্গে এনপিআকে যাতে সংযুক্ত করা না-হয়, কেন্দ্রের কাছে আজ সেই আবেদন করেছেন অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী-সহ ১৯০ বিশিষ্টজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন